লিখিত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণদের জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে শিল্প একাডেমিতে নিয়োগ ও প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধভাবে ১০টি পদে ২৩ জন প্রার্থী নিয়োগ দিয়ে তাদের মাধ্যমে বেতন-ভাতা বাবদ ৮ কোটি ২৮ লাখ ৪৯৫ টাকা উত্তোলন করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ লিয়াকত আলী (লাকী) এবং পরিচালক (প্রশাসন) জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরীসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (৬ অক্টোবর) জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ থেকে দুদকের বিশেষ অনুবিভাগের উপ-পরিচালক সুমিত্রা সেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বিকেলে সেগুনবাগিচাস্থ প্রধান কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার মূল্যায়ন শিটের নম্বরপত্র টেম্পারিং করে অনুত্তীর্ণদের উত্তীর্ণ দেখিয়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে শিল্পকলা একাডেমিতে লোকবল নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ লিয়াকত আলী (লাকী) এবং পরিচালক (প্রশাসন) জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরীসহ জড়িত ২৪ জন। তাদের আসামি করে আজ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুদক জানায়, শিল্পকলা একাডেমির নিয়োগ পরীক্ষায় জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ডিজি মোহাম্মদ লিয়াকত আলী (লাকী) এবং পরিচালক (প্রশাসন) জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী ছাড়াও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির কালচারাল অফিসার আল মামুন, কালচারাল অফিসার মো. হামিদুর রহমান, কালচারাল অফিসার বেগম সুদীপ্তা চক্রবর্তী, কালচারাল অফিসার হাসান মাহমুদ, কালচারাল অফিসার বুনা লায়লা মাহমুদ, সহকারী পরিচালক (বাজেট ও প্ল্যানিং) সামিরা আহমেদ, স্টেজ ম্যানেজার রহিমা খাতুন, গাইড লেকচারার মাহাবুবুর রহমান, ইন্সট্রাকটর (সংগীত ও যন্ত্র) মীন আরা পারভীন, ইন্সট্রাকটর (নৃত্য) বেগম প্রিয়াংকা সাহা, যন্ত্রশিল্পী (গ্রেড-৩) নারায়ণ দেব লিটন, যন্ত্রশিল্পী (গ্রেড-৩) মোহাম্মদ জিয়াউল আবেদীন, নৃত্যশিল্পী (গ্রেড-৩), লায়লা ইয়াসমিন, নৃত্যশিল্পী (গ্রেড-৩) মিফতাহুল বিনতে মাসুক, নৃত্যশিল্পী (গ্রেড-৩) আলকা দাশ প্রাপ্তি, নৃত্যশিল্পী (গ্রেড-৩) সুমাইতাহ তাবাসসুম খানম, কণ্ঠশিল্পী রোকসানা আক্তার রূপসা, কণ্ঠশিল্পী আবদুল্লাহেল রাফি তালুকদার, কণ্ঠশিল্পী সোহানুর রহমান, কণ্ঠশিল্পী আবিদা রহমান সেতু, কণ্ঠশিল্পী মোহনা দাস, ক্যামেরাম্যান (জনসংযোগ) মো. রুবেল মিয়া।
দুদক জানায়, শিল্পকলা একাডেমির সাবেক ডিজি লিয়াকত আলী লাকী এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক (প্রশাসন) জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী তাদের নিকট সংগৃহীত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রেরিত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার নম্বরপত্রে অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার উদ্দেশ্যে লিখিত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষার নম্বরপত্রে নম্বর বাড়িয়ে অবৈধভাবে ১০টি পদে ২৩ জন প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করেছেন। পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের উত্তীর্ণ করে বিভিন্ন পদে যোগদান করে তাদের বেতন-ভাতা বাবদ সরকারি তহবিল থেকে গৃহীত ৮ কোটি ২৮ লাখ ৪৯৫ টাকা উত্তোলন করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষতিপূরণপূর্বক দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।