ঢাকা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এবং দুই মেয়রের অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও দুদকের গোপন অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম এমপি ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের ও স্ত্রী-সন্তানদের নামে দেশে-বিদেশে অঢেল সম্পদ গড়েছেন। তিনি আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে নিম্ন আদালতে অধিকাংশ কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন। খাদ্যমন্ত্রী থাকার সময় দুর্নীতির মাধমে ব্রাজিল থেকে নিম্নমানের গম আমদানি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
শুধু কামরুল ইসলাম নন, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি পৌরসভার মেয়র মেজবাহ উদ্দিন মেজু ও নেত্রকোনা জেলার মদন পৌরসভার মেয়র মো. আব্দুল হান্নান তালুকদারের গাড়ি-বাড়িসহ বিপুল অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদক জানায়, সাবেক মন্ত্রী কামরুল দুর্নীতি করে নিজ নামে আজগর লেনে চারতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। মিরপুর আবাসিক এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট, নিজ নামে মিরপুর হাউজিং এস্টেটে ৪ কাঠা জমি, নিউ টাউনে ১০ কাঠা জমি, দুটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রজার গাড়িও রয়েছে তার। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি ও তার অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের নামে-বেনামে প্রচুর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ গড়েছেন। বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন তারা।
দুদক জানায়, মেজবাহ উদ্দিন মেজু রামগতি পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম করেছেন। প্রভাব খাটিয়ে স্বনামে ও তার পক্ষে অন্য ব্যক্তিবর্গের নামে প্রচুর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন মেজবাহ উদ্দিন মেজু। রামগতি পৌরসভায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না করে ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন বাজার-ঘাট নিজস্ব লোকের কাছে ইজারা দিয়ে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করেছেন তিনি। মেজবাহ উদ্দিন মেজু র বিরুদ্ধে নিজ নামে, স্ত্রী ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের নামে-বেনামে সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে।
মদন পৌরসভার মেয়র আব্দুল হান্নান তালুকদার বিভিন্নভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে আত্মীয়-স্বজনের নামে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। মদনপুর পৌরসভার হাট-বাজার ঘনিষ্টজনদের নামে ইজারা দিয়েছেন আব্দুল হান্নান তালুকদার। তিনি ও তার ভাই হাট-বাজার ও স্ট্যান্ডসমূহের ইজারার অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি মদনপুর পৌরসভার একাধিক জমি কয়েক কোটি টাকা দিয়ে কিনেছেন এবং একাধিক স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। নিজ গ্রামে কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করেছেন আলিশান বাড়ি। আব্দুল হান্নান তালুকদার ২ কোটি টাকা দিয়ে নিজ এলাকায় প্রায় ৫ একর জায়গা কিনেছেন বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে জানা গেছে।