ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ইস্যু করে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন আওয়ামী লীগ সরকার আমলের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী ও সাবেক এমপি আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কমিশন গ্রহণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, সিলেট-৬ আসনের সাবেক এমপি ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কমিশন গ্রহণ করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী এই দুই মন্ত্রী ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি নিজে ও পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে বিদেশে টাকা পাচার করেছেন। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে গোয়েন্দা রিপোর্টে। যার কারণে নুরুল ইসলাম নাহিদ ও আ.ক.ম. মোজাম্মেল হকের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
দুদক জানায়, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক অত্যন্ত প্রভাবশালী ছিলেন। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ইস্যু করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। নিজ নামে গাজীপুরের জয়দেবপুরে ৩ তলা ভবন, একই এলাকায় আরেকটি ২ তলা ভবন রয়েছে। তার নামে বিভিন্ন ব্যাংকে জমা ও অন্যান্য বিনিয়োগ পাওয়া যায়। তার নামে গাড়ি ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৩-৪৬৭৭ ও ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-৯৮৬০ রয়েছে। গাজীপুরের বিভিন্ন মৌজায় ৬৯১.০৮ শতক জমি এবং ১০১.৪৮৫ শতক অকৃষি জমি রয়েছে। তার নিজ নামে, স্ত্রী ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের নামে-বেনামে সম্পদ অর্জন করেছেন বলে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকাকালে বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কমিশন গ্রহণ করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। নিজ নামে উত্তরা আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাটসহ ৫ কাঠা জমি, নিকুঞ্জ আ/এ ৩ কাঠা জমি, তার একক ও যৌথ মালিকানায় সিলেট বিয়ানীবাজারে অকৃষি জমি; তার নামে বিভিন্ন ব্যাংকে জমা ও অন্যান্য বিনিয়োগ, তার নামে স্ত্রীর নামে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন ব্যাংকে জমা; গাড়ি ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৮-৪৪০০ রয়েছে, তার ভাই যুক্তরাজ্যে প্রবাসী ডা. নজরুল ইসলাম ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বন্ধু কামাল আহমদের মাধ্যমে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। মন্ত্রী থাকাকালে ঠিকাদারদের থেকে কোটি কোটি টাকা কমিশনের বিনিময়ে হাতিয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। তার নিজ নামে, স্ত্রী ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের নামে-বেনামে সম্পদ অর্জন করেছেন বলেও গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।