আইন ও অপরাধ

যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যা: এএসপিসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগে রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমির এএসপি (সাময়িক বরখাস্ত) আব্দুল কাদেরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো. শাহরিয়ার কবিরের আদালতে নিহতের ভাই সাদেক হোসেন বাচ্চু মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

অপর আসামিরা হলেন: ভিকটিম সাদিয়া আক্তার বীনার স্বামী শাহাদাৎ হোসেন শিপন, মা হেনা বেগম, বাবা সৈয়দ আহম্মেদ ওরফে কুট্টি বেপারী, আব্দুল কাদেরের স্ত্রী জেরিন তাসমীয়া, ছোট ভাই মেরাজ হোসেন শাওন, অপর দুই ভাই মাইনউদ্দিন ও শাহিন এবং তাদের স্ত্রী হামিদা বেগম ও সুমাইয়া। বাদীপক্ষের আইনজীবী নার্গিস আক্তার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৮ জুলাই শাহাদাৎ হোসেনের সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়। শাহাদাতের বড় ভাই এএসপি আব্দুল কাদের ও তার স্ত্রী জেরিন তাসমীয়া তাকে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যান। ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারি আব্দুল কাদের ও জেরিন তাসমীয়া সাদিয়ার বাড়িতে যান। শাহাদাৎ হোসেনের ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তারা। তবে, সাদিয়ার ভাই বাচ্চু যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানান। আব্দুল কাদের ও জেরিন তাসমীয়া হুমকি দেন, যৌতুক না দিলে সাদিয়ার মারাত্মক ক্ষতি হবে। পরে সাদিয়ার বোনের কাছেও যৌতুক দাবি করেন আসামিরা। না দিলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের হুমকি দেওয়া হয়। শাহাদাৎ এর আগে একটি বিয়ে করেন। যৌতুক দাবি করায় সেই স্ত্রী চলে যান।

গত ১০ অক্টোবর সাদিয়ার বোনের কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন আসামিরা। টাকা না দেওয়ায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আটি গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে আসামিরা সাদিয়াকে মারধর করেন। প্রাণ বাঁচাতে সাদিয়া দৌড়ে পাশের বাসার ছাদে আশ্রয় নেন। সেখানে গিয়েও আসামিরা তাকে রড় দিয়ে এলোপাথারি পেটান। পরে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। আব্দুল কাদেরের নির্দেশে এ ঘটনা চাপা দিতে তারা আত্মহত্যার চেষ্টার নাটক সাজান। তারাই তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সাদিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা আরও খারাপ হলে আসামিরা সাদিয়া হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান। ১৬ অক্টোবর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাদিয়া।