আইন ও অপরাধ

ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত সহকারী মতিন ৩ দিনের রিমান্ডে

সরকারি ইস্পাহানী কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াজ হোসেন হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আবদুল মতিনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সালেহের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। 

এদিন তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক মো. ইলিয়াস হোসেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ইকবাল হোসেন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ঘটনাস্থল কেরানীগঞ্জের আরশি নগরে সন্ত্রাসীরা তার ছত্রছায়ায় সব ঘটনা ঘটিয়েছে। ওবায়দুল কাদেরের রাজনৈতিক পাওয়ার ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। ওই এলাকায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সন্ত্রাসীদের সে তা ছত্রছায়ায় রাখে। তার হুকুমে ভিকটিম রিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে। এভাবে জীবন কেড়ে নিয়েছে বহুজনের। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।

আবদুল মতিনের পক্ষে তার আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, আবদুল মতিনের মোহাম্মদপুরে। তিনি সেখানে বাস করেন। কেরানীগঞ্জ যাননি, বসবাসও করেননি। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। এজাহারে নামও নেই। আর ঘটনাস্থলেও ছিল না। তিনি অসুস্থ। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করছি। প্রয়োজনের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে রোববার রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার শাক্তা ইউনিয়নের চর ওয়াশপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। ‘মমতাজ মহল’ নামে ওই বাড়িটি তার স্ত্রীর নামে বলে জানিয়েছেন মতিন।

আব্দুল মতিন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থানার চর খাগকাটা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত সহকারীর পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই কেরানীগঞ্জ মডেল থানার শাক্তা ইউনিয়নের আরশিনগর এলাকায় বৈষম্যবিরোধীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নেন ইস্পাহানী কলেজের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াজ হোসেন (২১)। ওই সময় আসামিদের ছোড়া গুলি তার মাথার পেছনে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। পরবর্তীতে ১৯ এ জুলাই সন্ধ্যা ৬টায় সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় গত ২৬ আগস্ট নিহতের চাচা রমজান আলী শওকত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।