নড়াইলে শীতের আগমনে চাহিদা বাড়ছে লেপ-তোশক তৈরির। লেপ তোশকের কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। জনসাধারণও ভিড় জমাচ্ছেন এসব দোকানে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে সরজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লোহাগড়া প্রেসক্লাব চত্বর, লক্ষীপাশা-মহাজন রোড়ের লোহাগড়া থানার সামনে, কলেজ মোড়ের দোকানগুলোতে সুই সুতো নিয়ে কাজ করছে কারিগররা। এখানকার লেপ তোশক তৈরির ২০টি বেডিং স্টোরে কর্মযজ্ঞ চলছে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
লোহাগড়া বাজারের লেপ-তোশক বেডিং স্টোরের মালিক কুটি মিয়া জানান, এ বছর বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লেপ-তোশক তৈরি উপকরণের খরচও বেড়েছে। এবার প্রতি গজ লেপ তৈরির কাপড়ের দাম ৬০ টাকা, তোশক ৫০ টাকা এবং প্রতি গজ জাজিম তৈরি কাপড়ের দাম রাখা হচ্ছে ১২০ টাকা করে। এছাড়া প্রতি কেজি কার্পাস তুলার দাম ৪০০ টাকা, শিমুল তুলার দাম ৪৫০ টাকা, আঙগুরি তুলার দাম ১২০ টাকা ও প্রতি কেজি জুটের দাম রাখা হচ্ছে ৫০ টাকা করে।
প্রেসক্লাব চত্বরের আজিবর বেডিং স্টোরের মালিক আজিবর চৌধুরী জানান, ৩০ থেকে ৩৫ বছর লেপ-তোশক তৈরি ও বিক্রি করে আসছি। এ কাজ করে আজ আমি স্বাবলম্বী। দুই ছেলে চার মেয়ের পড়ালেখার খরচ মিটিয়ে সংসারের হাল ধরে আছি এ ব্যবসা থেকেই। এ বছর রেডিমেট লেপ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪শ টাকার মধ্যে, তোশক বিক্রি হচ্ছে ১৫শ টাকা থেকে ১৮শ টাকা এবং জাজিম বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫শ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া বালিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৫শ টাকা।
উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের বাসিন্দা মর্জিনা বেগম (৩৫) জানান, আমরা গরীব মানুষ। কম্বলের যে দাম সেটা কিনার সামর্থ নাই। এ কারণে অল্প টাকা দিয়ে লেপ বানিয়ে নিচ্ছি। দিনের বেলায় শীত অনুভূত না হলেও রাতে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। তাই পাতলা কাঁথা দিয়ে শীত নিবারণ হয় না। এ জন্য পরিবারের সদস্যদের জন্য দুটি লেপ বানিয়েছি।
লোহাগড়া ইউনিয়নের চরকালনা গ্রামের বাসিন্দা জাফর মোল্যা জানান, শীত পড়তে শুরু করেছে। বেশি শীত পড়ার আগেই নতুন লেপ-তোশক বানাতে এসেছি। কিন্তু তুলা, কাপড় ও কারিগরের মজুরি বেশি হওয়ায় দুইটার জায়গায় একটা বানিয়েছি।
কারিগর সুজন মৃধা জানান, শীত আসার সাথে সাথে লোকজন লেপ-তোশক বানাতে শুরু করে দিয়েছে। আমরাও ব্যস্ত সময় পার করছি। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসা আরো বৃদ্ধি পাবে। মনে হয় এ বছর আয় রোজগার ভালোই হবে। তবে জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় লোকজন তাদের ইচ্ছামতো লেপ-তোশক বানাতে পারছেন না।