‘‘এই সরকার অন্তর্বর্তীকালীন এবং নিরপেক্ষ। এই সরকারের পক্ষে যত দ্রুত সম্ভব বিভিন্ন ধরনের সংস্কারের যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলো শেষ করে নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়া।’’
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক আবুল কাশেমের আদালতে দুদকের করা অর্থ আত্মসাতের মামলায় খালাস পেয়ে এ কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
মামলায় মোশাররফ হোসেনের ছেলে খন্দকার মাহবুব হোসেন ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক লাইন ডিরেক্টর ডা. মাহবুবুর রহমানকেও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দিয়েছেন আদালত।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘আল্লাহর দরকারে শুকরিয়া আদায় করি। আমি, আমার ছেলে ও স্বাস্থ্য অধিদফতের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা, বানোয়াট মামলা করা হয়। যে মামলার কোনো ভিত্তি, প্রমাণ ছিলো না। ওয়ান ইলেভেনের সময় এ মামলা হয়। সেই হিসেবে দেখতে পাবেন, প্রায় ১৬ বছর এ মামলা চলেছে। কিন্তু সরকারপক্ষ থেকে যে প্রাথমিক তথ্য, প্রমাণ দিয়ে এ মামলায় অভিযোগ করবে এবং সেটা প্রমাণ করবে এমন কোনো তথ্যপ্রমাণ দিতে পারে নাই। যার পরিপ্রেক্ষিতে এতোদিন পরে আজকে মহামান্য আদালত আমাদের মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন।’’
সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘‘মামলার মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি ওয়ান ইলেভেনের সময় এবং তার পরে শেখ হাসিনার সরকার এই মিথ্যা মামলাগুলোকে কেন্দ্র করে আমাদের নির্যাতিত করেছে। আমাকে গত ১৭ বছরে প্রায় পাঁচ বছর বিভিন্ন মামলায় হাজত খাটতে হয়েছে। এতগুলো মামলায় এভাবে আমাদের আসতে হয়েছে। তারা কিন্তু এসব মামলা ব্যবহার করে আমাদের নির্যাতিত করে রাজনীতি থেকে বিদায় করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এ দেশের মানুষের বিচারে, আল্লাহর হুকুমে তাদের পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করে পালাতে হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে, সাজা দিয়ে, জেলখানায় রেখে তাকে অসুস্থ করে ফেলেছে হত্যার উদ্দেশ্যে। আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে আছেন, দেশে আছেন। আর শেখ হাসিনা পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এদেশে স্বৈরাচার আগেও কিন্তু ছাত্র গণআন্দোলনে পদত্যাগ করেছে। যেমন হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ, তিনি কিন্তু দেশ থেকে পালিয়ে যাননি। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। এ থেকে বোঝা যায়, তারা কত দুর্বল। কত অন্যায়, অপরাধ, নির্যাতন এ দেশের মানুষকে করেছে। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য।’’
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘আজকে জনগণের প্রত্যাশা, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এ সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এই সরকার অন্তর্বর্তীকালীন এবং নিরপেক্ষ। এই সরকারের পক্ষে যত দ্রুত সম্ভব বিভিন্ন ধরণের সংস্কারের যে পদক্ষেপগুলো নিছেন, সেগুলো শেষ করে বিশেষ করে নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে সংস্কার প্রয়োজন দ্রুত শেষ করে নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়া এই সরকারের দায়িত্ব। আর যত দ্রুত এটা সম্ভব হবে, দেশের জন্য, জনগণের জন্য মঙ্গল এবং এই সরকারের জন্যও মঙ্গল।’’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা ইতোমধ্যে দলের মধ্য থেকে দাবি তুলেছি, ওয়ান ইলেভেনের সময় এবং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সময় যে সকল মামলা, বানোয়াট মামলা হয়েছে সেগুলো যত শীঘ্রই সম্ভব প্রত্যাহার করা। এটা আগামী নির্বাচনের সময় অবশ্যই বাঁধা সৃষ্টি করবে। সরকার ইচ্ছা করলে অনতিবিলম্বে বাঁধামুক্ত করতে পারে। সরকার আন্তরিক হলে এটা সম্ভব।’’