আইন ও অপরাধ

বোমা হামলা মামলা, খালেদা জিয়াসহ ২৬ জনকে অব্যাহতি 

সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের মিছিলে বোমা হামলা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ২৬ জনকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুর রহমানের আদালত মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে এ আদেশ দেন। 

অব্যাহতি পাওয়া অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন (মৃত), বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিএনপির সহশ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আ. কাইয়ুম ও বিএনপির সহ-পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু।

খালেদা জিয়াসহ কোনো আসামির বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সাক্ষী খুঁজে না পেয়ে গত ১৩ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. আব্দুস ছোবহান আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। একইসঙ্গে খালেদা জিয়াসহ ২৬ জনকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে সুপারিশ করেছেন। 

মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ডাকা মিছিলে অনেক লোক ছিল। তারা মিছিল করে বেলা ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে গুলশান ২নং গোল চত্বরের নিকট পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা লোকজন কয়েকটি বোমা নিক্ষেপ করে। এতে মিছিলে থাকা লোকজন আহত হয় এবং মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়। আহত লোকজন ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়। মিছিল চলাকালে কে বা কারা কোন দিক থেকে বোমা নিক্ষেপ করে তার কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী বা কে কে বোমা নিক্ষেপ করে তা তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা বা পরে একাধিক তদন্ত কর্মকর্তা সনাক্ত করতে পারেনি। এ ব্যাপারে কোন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি নেই। 

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, তদন্তকালে কোনো সাক্ষী এজাহারনামীয় আসামিদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রদান করেননি। মামলাটি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় তদন্তকালে বর্তমানে ঘটনাস্থলের আশপাশের তৎকালীন সময়ে কোনো লোকজন না থাকায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো সাক্ষী পাওয়া যায়নি। এ মামলায় কোনো আসামি সনাক্ত করতে না পারায় এবং বাদী এজাহারে যে তথ্যে ভিত্তিতে নাম উল্লেখ করেন তা ভুল থাকায় এবং এজাহারে উল্লেখিত আসামিরা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় মামলাটি অহেতুক বিলম্ব না করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। 

২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সদস্যরা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনের জন্য গুলশানে সমবেত হন। সেখানে সমাবেশ শেষে ২০ থেকে ৩০ হাজার মানুষ সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় ঘেরাও করার উদ্দেশ্যে রওনা হলে বোমা নিক্ষেপ করা হয়।

ওই ঘটনায় ঢাকা যানবাহন ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাচ্চু বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মাহবুবুর রহমানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করেন।