অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মারধর করে গানভিত্তিক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘গান বাংলার' মালিকানা দখলের অভিযোগে করা মামলায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৌশিক হোসেন তাপসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত ৪ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক হারুনুর রশীদ তাপসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছেন। আদালত তার উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য ৯ ডিসেম্বর তারিখ ধার্য করেন।
এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানি করেন। পরে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত ২৫ নভেম্বর সৈয়দ শামস উদ্দিন আহমেদ তাপসসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন-তাপসের স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ফারজানা মুন্নী, রবি শংকর মৈত্রী, এম. আমানুল্লাহ খান (চঞ্চল খান), সৈয়দ নাবিল আশরাফ। এছাড়া, অজ্ঞাতনামা আরও ৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বাদী সৈয়দ সামস উদ্দিন আহমেদ মামলায় অভিযোগ করেন, ২০১১ সালের ২৫ জুলাই মো. বদরুদ্দোজা সাগর, বখতিয়ার শিকদার ও রবিশঙ্কর মৈত্রী মিলে প্রাইভেট স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল প্রতিষ্ঠার জন্য রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের কার্যালয় থেকে বার্ডস আই মাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন পিএলসি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন নেন। কোম্পানি গঠনের সময় মামলার বাদী ৭ হাজার প্রাথমিক শেয়ার এবং বখতিয়ার শিখদার, রবিশঙ্কর মৈত্রী ও বদরুদ্দোজা সাগর প্রত্যেকে ১ হাজার করে শেয়ার নেন। প্রাথমিক মূলধন নির্ধারণ করা হয় ১ কোটি টাকা।
২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর সৈয়দ সামস বার্ডস আই মাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন পিএলসির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং গান বাংলা স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলের (প্রস্তাবিত) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে থাকার সময় আমানুল্লাহ খানের বাসায় যান। রবিশঙ্কর মৈত্রী ও এম আমানুল্লাহ খানের অনুরোধে তিনি ওই বাসায় গিয়েছিলেন।
আনুমানিক রাত ৮টার দিকে আসামি কৌশিক হোসেন তাপস, ফারজানা মুন্নী, সৈয়দ নাবিল আশরাফসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জন কিছু কাগজ নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। কোশিক হোসেন তাপস ও সৈয়দ নাবিল আশরাফের হাতে থাকা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ফিল্মি কায়দায় সকল আসামির সহযোগিতায় সৈয়দ শামস উদ্দিন আহমেদ ও মো. বদরুদ্দোজা সাগরকে কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে বলা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আসামিদের কথায় বাদী বুঝতে পারেন যে, আসামিরা বার্ডস আই মাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন পিএলসি নামীয় কোম্পানিতে বাদী ও বদরুদ্দোজা সাগরের ৮ হাজার শেয়ারের মালিকানা আত্মসাৎ করবেন। একপর্যায়ে বাদী ও মো. বদরুদ্দোজা সাগর প্রাণ বাঁচতে কাগজে স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষর নেওয়ার পর আসামিরা বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়ে কারো কাছে কোনো তথ্য প্রকাশ করলে মামলা এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন।
গত ৪ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা থেকে কৌশিক হোসেন তাপসকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ইশতিয়াক মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।