বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আশুলিয়ায় হত্যার পর ছয় জনের লাশ পোড়ানোর ঘটনায় ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি গোলাম মোর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। গ্রেপ্তার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৬ জানুয়ারি পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
পরোয়ানা জারি হওয়া অপর চার জনই পুলিশ কর্মকর্তা বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তবে তাদের পরিচয় জানাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।
আদেশের পর চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর তাদের লাশ চ্যাংদোলা করে ভ্যানে উঠিয়ে আগুনে পোড়ানো হয়। যেন কেউ বুঝতে না পারে তারা লাশ পুড়িয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এখন তদন্ত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কিছু কর্মকর্তার নাম পাওয়া গেছে।”
আরও পড়ুন: ভ্যানের ওপর লাশের স্তূপের ভিডিওটি আশুলিয়া থানার
তিনি বলেন, “আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত আরও কর্মকর্তার নাম পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হবে।”
আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গত ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি অভিযোগ করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩০ জনকে সেখানে আসামি করা হয়।
জুলাই-অগাস্টে আন্দোলনের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় ছয় জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও গত ৩০ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যরা রাস্তা থেকে মৃতদেহ একটা ভ্যানে ছুড়ে ফেলছেন। একপর্যায়ে ভ্যানে স্তূপাকার লাশ একটি প্লাস্টিকের ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেন পুলিশ সদস্যরা। ভ্যানে তোলা এক ব্যক্তির লাশ শনাক্তের মাধ্যমে জানা যায় ঘটনাটি আশুলিয়ার।
এএফপির ফ্যাক্ট-চেকিং এডিটর কদরুদ্দীন শিশির ওই সময় তার ফেসবুক টাইমলাইনে ঘটনাটি ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার নিকটবর্তী এলাকায় বলে উল্লেখ করেন।