আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপট এরকম যে, একজন পুরুষ পরিবারের সবার জন্য অর্থ উপার্জন করবে। পরিবারের সবার দায়িত্ব বহন করবে। আর্থ-সামাজিক অবস্থানে সফল হবে এবং সবার জন্য সিদ্ধান্ত নেবে। সে সব সময় ভালো থাকবে।এই হচ্ছে সামাজিক শিক্ষা।
সমাজ বিজ্ঞানীরা বলেন, এই সামাজিক শিক্ষা জন্ম থেকেই তার ঘাড়ে বিশাল এক বোঝা চাপিয়ে দেয়। এই সমাজ ব্যবস্থায় পুরুষের কাছে আশা করা হয়- পুরুষ কাঁদবে না, সে ভেঙে পড়বে না। দুর্বলতা প্রকাশ করতে পারবে না।
বংশ পরম্পরায় পুরুষ এই যে সামাজিক শিক্ষা বহন করে চলেছে এই শিক্ষাকে বলা হচ্ছে জেন্ডার রোল। পুরুষের এই সামাজিক শিক্ষার সঙ্গে কৃষিভিত্তিক সভ্যতার একটা সম্পর্ক আছে। এই যে রোল অ্যসাইনমেন্ট, সেটা সমাজ করেছে নানান কারণে।
ফেমিনিস্টদের মতে, সমাজ এটা করেছে পুরুষের আধিপত্য বজায় রাখার জন্য।
ফাঙ্কশনালিস্টদের মতে, এটা অর্ডার মেইনটেইন করার জন্য জরুরি। সেখান থেকেই শুরু।
বিশ্বচিত্রের দিকে তাকালে দেখা যায়, পুরুষের অবস্থান নারীর উপরে। তাই মনে করা হয় পিতৃতন্ত্র পুরুষকে শুধু সুবিধাই দেয়।
নৃবিজ্ঞানী জোবাইদা নাসরিন মনে করেন পুরুষ নিজের তৈরি পিতৃতন্ত্রের বেড়াজালে নিজেই বন্দি। তাদের উপর একটা বাড়তি চাপ থাকে যে তাকে চাকরি পেতেই হবে, সংসারের হাল ধরতে হবে, সে যখন বিয়ে করবে তখন স্ত্রীর খরচ দিতে হবে - এটা একটা বিশাল মনস্তাত্ত্বিক চাপ। কিন্তু চাপের মধ্যে থাকলেও কাউকে কিছু বলা যাবে না। না পারার ফল হলো বিশ্বব্যাপী পুরুষেরা বেশি আত্মহত্যা করেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বব্যাপী নারীদের তুলনায় পুরুষেরা দ্বিগুণ সংখ্যায় আত্মহত্যা করে। ব্যাপক মানসিক চাপে নানা ধরনের শারীরিক অসুখে বেশি ভোগেন পুরুষেরা। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী নারীদের তুলনায় পুরুষের গড় আয়ু কম।
এই অবস্থা থেকে বের হতে পুরুষের জন্য উপযুক্ত সামাজিক পরিবেশ কেমন হওয়া উচিত-তাই খুঁজে বের করতে বলছেন সমাজবিজ্ঞানীরা।
তথ্যসূত্র: বিবিসি অবলম্বণে