ঋতু পরিবর্তনের ফলে চুল পড়লে তাকে টেলোজেন ইফ্লুভিয়াম বলে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীর নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা শুরু করে। এই সময়টাতে চুল পড়ার প্রবণতা বাড়া খুব স্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত চুল পড়া মোটেও স্বাভাবিক নয়। এতে চুলের বৃদ্ধি ব্যহত হয়। এমনকি ব্যক্তির আত্মবিশ্বাসও কমে যায়। যাইহোক জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন এনে চুলের ময়েশ্চারাইজারের ভারসাম্য ঠিক রাখা যায় এবং চুল পড়া রোধ করা যায়।
ডার্মাটোলজিস্ট ডা. চারু শর্মা বলেন, আবহাওয়ার উপাদানগুলো আমাদের চুলের ওপর সরাসরি প্রভাব রাখে। যেমন—
বাতাসের আদ্রতা: আদ্রতা পরিবর্তন হলে এর প্রভাব মাথার ত্বকেরও পড়ে। ময়েশ্চারাইজারের ভারসাম্য নষ্ট হয়। শুষ্কতা অথবা অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব দেখা দেয়। দুই কারণেই চুল পড়তে পারে।
সূর্যের আলো: অতিরিক্ত সূর্যালোক চুলের ভাজের জন্য ক্ষতিকর। এর প্রভাবে ভাজগুলো থেকে চুল ভেঙে পড়তে পারে। এবং চুল পড়া বাড়তে পারে।
তাপমাত্রার ওঠানামা: হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন হলে স্ক্যাল্প এবং চুলের ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে। এতে চুল পড়তে পারে।
কয়েকটি উপায়ে চুল পড়া প্রতিরোধ করুন:
১. চুল ক্যারাটিন দিয়ে তৈরি। যা এক প্রকার প্রোটিন। চুলের সুস্থতার জন্যও প্রয়োজন প্রোটিন। প্রোটিনের যোগান পেতে আপনার ডায়েটে যুক্ত করতে পারেন দুধ, পনির, দই, মুরগির মাংস এবং বীজ জাতীয় খাবার।
২.ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি, আয়রন, জিঙ্ক জাতীয় খাবার খান। ভিটামিন ডি-এর যোগান পেতে চর্বিযুক্ত মাছ খেতে পারেন। ভিটামিন বি-এর যোগান পেতে খেতে পারেন ডিম, বাদাম এবং হোল গ্রেইন (শস্যদানাযুক্ত খাবার) জাতীয় খাবার।
৩. চুল এবং মাথার ত্বক ভেতর থেকে ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।
৪. চুলের যত্নে সঠিক রুটিন মেনে চলুন। যেমন— মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। চুল অতিরিক্ত ধোয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে চুলে শুষ্কতা দেখা দেয় এবং চুল ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। প্রতিদিন পাঁচ মিনিট মাথার ত্বক ম্যাসাজ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকবে। চুলও ভালো থাকবে।
৫. প্রতিবার চুল ধোয়ার পরে চুলের ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখার জন্য এবং জট খোলার জন্য কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
আরও যা মানতে হবে: রোদে বের হলে চুল ঢেকে রাখুন। নোনা পানিতে চুল ধোবেন না। তাপ দিয়ে চুলের স্টাইলিং করবেন না।
ডা. চারু শর্মা বলেন, জিনগত কারণে চুল পড়তে পারে। পরিবারের সদস্যদের যদি এই সমস্যা থাকে তাহলে আপনার সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ চুল পড়া রোধে সঠিক পুষ্টি, ব্যালেন্স ডায়েট এবং সতেজ থাকার প্রয়োজন হতে পারে। এর সঙ্গে ব্যক্তিগত হতাশা মোকাবিলার উপায় খুঁজতে হতে পারে। সুতরাং একজন ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস