লাইফস্টাইল

শিশুর খাবার আগ্রহ বাড়ানোর কয়েকটি উপায়

মাকে বুঝতে হবে শিশুকে কখন খাবার দিতে হবে, কতটুকু সময়ের ব্যবধানে খাবার দিতে হবে এবং কখন কোন খাবারটা দিতে হবে। পুষ্টিবিদরা বলেন, শিশুরা অনেক বেশি খেলাধুলা করে এর ফলে তাদের অনেক শারীরিক পরিশ্রম হয়। এ জন্য শিশুকে ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়ানোর প্রয়োজন হয়। শিশুর খাবার এমন হওয়া উচিত যাতে সে প্রয়োজনীয় ক্যালরি পায়। 

বি আর বি হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান বলেন, ‘প্রতিনিয়ত কম খাওয়ার কারণে শিশুর কোনো সমস্যা হচেছ কিনা— এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। শিশু যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমায়, খেলাধুলা করে এবং শারীরিক পরিশ্রম করে তাহলে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।’ 

তবে যেসব শিশু তার বয়স অনুযায়ী লম্বা এবং উচ্চতায় ঠিক ভাবে বাড়ছে না এবং ওজনও কম সেইসব শিশুদের ক্ষেত্রে কিছু করণীয় রয়েছে। 

ইসরাত জাহানের পরামর্শ—

মায়েরা একটা ভুল কাজ করে থাকেন তাহলো এক দুই ঘণ্টা পর পর শিশুকে কিছু না কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। খেয়াল রাখতে হবে, শিশুদের পাকস্থলি তিন ঘণ্টা পর পর খালি হয়। এই সময়ের আগে শিশুকে খাবার দিলে সে বমি করতে পারে। সুতরাং তিন ঘণ্টা পর পর শিশুকে খাবার দিতে হবে।

বড়রা যেমন খাবারে বৈচিত্র পছন্দ করে শিশুরাও বৈচিত্রময় খাবার পছন্দ করে। সেক্ষেত্রে বার বার একই ধরনের খাবার তাকে দেওয়া যাবে না। সারা দিনে শিশুকে ছয় বা সাত বার খাবার দিতে হবে।

সকালে শিশুকে ডিম খাওয়াতে পারেন। সিদ্ধ, ভাজি বা পোজ-শিশু যেভাবে পছন্দ করে সেভাবেই তাকে খাওয়াতে পারেন। যেসব শিশুর দাঁত নেই তাদেরকে ডিম পোজ করে সুজির সঙ্গে মিলিয়ে দিতে পারেন।

সকালের খাবার গ্রহণের তিন ঘণ্টা পরে শিশুকে একটা ফল খেতে দিতে পারেন। ছোট ছোট করে স্লাইস করে ফল কেটে দিতে পারেন। সম্ভব হলে একদিন মিক্স ফল দিতে পারেন আবার অন্যদিন জুস করে দিতে পারেন। একদিন আবার ফলের কাস্টার্ড করে দিতে পারেন। 

এরপরের খাবার দিতে পারে সবজি ও ডাল মিশ্রিত খিচুড়ি। বা বাসায় যেসব সবজি থাকে সেগুলো একটু একটু নিয়ে সিদ্ধ করে অলিভ অয়েল দিয়ে মেখে শিশুকে খেতে দিতে পারেন। বিভিন্ন কালারের সবজি দিতে পারলে ভালো।

দুপুরে খিঁচুড়ি, পোলাও বা ভাত-এর সঙ্গে মাছ দিতে পারেন। শিশুর খাবারে তেল একটু বেশি দিতে পারেন। কারণ ওদের ক্যালরিটা একটু বেশি দরকার হয়। 

সন্ধ্যায় শিশুকে একটু নুডুলস খেতে দিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে নুডুলস- এর সঙ্গে যে মসলা থাকে সেই মসলা ব্যবহার করা যাবে না। ডিম বা সবজি দিয়ে ঘরে থাকা মসলা দিয়ে নুডুলস রান্না করবেন। শিশু নুডুলস খেতে না চাইলে সবজির পাকোড়া বানিয়ে দিতে পারেন। পাকোড়ার সঙ্গে সালাদ এবং মেয়োনিজ দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করলে শিশু খেতে আগ্রহ দেখাবে। সন্ধ্যার খাবারে স্যান্ডউইচও দিতে পারেন। এর মধ্যে সবজি ও মেয়নেজ মিশিয়ে দেবেন। তাহলে সে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে।

রাতের বেলায় শিশুকে ফল বা জুস জাতীয় কোনো খাবার দেবেন না। সে সময় একটু ভারী জাতীয় খাবার দিতে হবে। সুজি, সাগু, সেমাই বা পুডিং দিতে পারেন। কারণ মিক্স খাবার শিশুর জন্য অনেক বেশি জরুরি।