মধ্যবয়সী পুরুষদের অনেকেরই ভুঁড়ি থাকে। চিকিৎসকেরা বলছেন, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এই ভুঁড়ি বেড়ে যায়। এর জন্য দায়ী খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন এবং পরিবেশ। এই ভুঁড়ি দেখতে নিরীহ কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভুঁড়ির জন্য মূল দায়ী হরমোন। হরমোনের ভারসাম্য ঠিক না থাকলে বিপাকজনিত সমস্যা দেখা দেয়। ধীরে ধীরে পেট ও কোমরে চর্বির মোটা স্তর দেখা দেয়। এ ছাড়া, শরীরে প্রোজেস্টেরন, ইস্ট্রোজেনের মতো হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা নষ্ট হয়।
ভাজাভুজি বেশি খাওয়া: ওয়ের্ক ফোর্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলেন, যখন একই তেল বারবার ব্যবহার করে খাবার প্রস্তুত করা হয় ওই খাবার ট্রান্সফ্যাট উৎপন্ন হয়। ট্রান্সফ্যাট পেটের মেদ বাড়িয়ে দেয়। পেটের মেদ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বেশি ভাজা পোড়া খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। সকালের জলখাবারে অনেকে লুচি, পরোটা, তেলে ভাজা রুটি খেতে পছন্দ করেন। প্রতিদিন ভাজাভুজি খেলে ভুঁড়ি যে বাড়বে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এই ধরনের খাবার খেলে পেটে চর্বি জমে।
কালো কফি পান করা: অনেক পুরুষ সকালে ঘুমের রেশ কাটাতে কালো কফি পান করেন। খালি পেটে কালো কফি খাওয়া একেবারেই ভাল নয়। এতে শরীরে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। পেটে মেদ জমে।
প্রোটিন কম খাওয়া: ভুঁড়ি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া প্রয়োজন। বিশেষত দিনের শুরুতে প্রোটিন খাওয়া জরুরি। প্রোটিন দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি রাখে। প্রোটিন পেটে বাড়তি মেদও জমতে দেয় না।
কম পানি পান করা: কম পানি পান করলে ওজন বাড়ে। সকালে খালি পেটে পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। সকালে খালি পেটে পানি পান করলে মেজাজ ভালো থাকে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। উচ্চমানের আমিষ ও আঁশসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা জরুরি, তবে তা খাওয়ার মধ্যে বা খাওয়ার পরপরই নয়। খাওয়ার কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর পানি পান করতে হবে।
এ ছাড়া শারীরিক পরিশ্রম না করলে ভুঁড়ি বাড়তে পারে। বিশেষত খাবার খাওয়ার পরপরই শুয়ে-বসে থাকলে, ব্যায়াম না করলে পেটে মেদ জমে। অনেক পুরুষের রাত জাগার অভ্যাস আছে। এটা একটি অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস। এতে ঘুম কম হয়। আর কম ঘুমালে শরীরের ভিসেরাল ফ্যাটসহ অ্যাবডোমিনাল ফ্যাট বাড়তে থাকে।