চুলের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত প্রোটিন। অনেক সময় আমরা খাবার গ্রহণ করার মাধ্যমে প্রোটিন পেয়ে থাকি। এরপরেও কেরাটিন চিকিৎসা, প্রোটিন সাপ্লিমেন্টের দরকার হতে পারে। আবার শীতকালে অনেকে গরম পানিতে গোসল করে এতে চুল ভেঙে পড়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। শীতকালে কী কী করলে চুল ভালো থাকবে জেনে নিন।
স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ: শীতে চুলের যত্নের এক নম্বর পরামর্শ হলো স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলা। যদি আপনার খাদ্যে পর্যাপ্ত প্রোটিন থাকে আপনার শরীর ভালো থাকবে। এতে আপনার ত্বক, মাথার ত্বক, নখ এবং চুলও ভালো থাকবে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে ডিম, মাছ, চামড়াযুক্ত মুরগি, আস্ত শস্য এবং বাদাম আপনার খাবারে যোগ করার চেষ্টা করুন। এগুলো চুল স্বাস্থ্যকর এবং চকচকে করতে সাহায্য করবে।
প্রোটিন মাস্ক: শীতকালে চুলের যত্নে প্রোটিন মাস্ক ব্যবহার করলে চুলের উজ্জ্বলতা ও স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, চুল দ্রুত বাড়বে। তবে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। সপ্তাহে একদিন মাস্ক ব্যবহার করা জরুরি। মাস্ক হিসেবে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি আপনার মাথার ত্বককে পুষ্টি দিতে পারে। অ্যালোভেরা জেল ঠান্ডা আবহাওয়ায় চুল ঝরঝরে রাখতে জাদু হিসাবে কাজ করে। অ্যালোভেরাতে একাধিক ভিটামিন রয়েছে যা মাথার ত্বককে ভালো রাখে। চুলকে করে নরম এবং সিল্কি করে।
কেরাটিন চিকিত্সা: শীতে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন। কেরাটিন হলো প্রোটিন যা চুলের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। আসলে চুলের প্রধান বিল্ডিং ব্লক হলো প্রোটিন। শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি থাকলে কেরাটিন চিকিৎসা চুল ভালো রাখতে সহায়তা দিতে পারে। কেরাটিন চুল মজবুত করে। এ ছাড়া শীতকালে চুলের যত্নে ওরাল প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। একাধিক গবেষণায় দেখানো হয়েছে চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
প্যারাবেন-মুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার: প্যারাবেন-মুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করলে শীতকালে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। প্যারাবেন চুলের সমস্ত প্রাকৃতিক তেলকে শুষ্ক, রুক্ষ করে এবং আটকে ফেলে। শীতে রুক্ষতা এড়াতে মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
চুলের কন্ডিশনার: হেয়ার কন্ডিশনার ব্যবহারে শীতকালেও চুল থাকবে ঝলমলে। কন্ডিশনারে তেল থাকে যা চুলে পুষ্টি জোগায় এবং মসৃণ করে। ভেজা চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এতে চুলের ভলিউম ঠিক থাকবে এবং চকচকে দেখাবে।
ম্যাসাজ: নিয়মিত স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে মাথার ত্বকে পুষ্টি সহজে পৌঁছায়। এই কৌশলটি বহু বছর ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ তেল চুলের জন্য ভালো। চুল ধোয়ার আগে আপনার মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করার জন্য ভিটামিন ই সমৃদ্ধ তেল ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
ওভার ওয়াশিং এড়িয়ে চলুন: অতিরিক্ত ধোয়া চুলের ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটি মাথার ত্বক রুক্ষ করে চুলকে রুক্ষতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। শীতকালে, প্রতিদিন চুল ধুবেন না। মাথার ত্বক তৈলাক্ত হলে স্প্রে শ্যাম্পু ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এটি মাথার ত্বক থেকে তেল নিঃসরণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।
চুলে সিরাম প্রয়োগ করুন: সিরাম এবং নন-চর্বিযুক্ত প্রাকৃতিক তেল চুলকে পুষ্ট করে, চুল লম্বা করে এবং স্প্লিট কমায়। তাই শীতকালে সিরাম ব্যবহার করা উচিত। শুষ্ক আবহাওয়ায় আপনার চুলকে অতিরিক্ত পুষ্টি দিতে পারে সিরাম।
উল্লেখ্য, শীতে চুল ধোয়ার জন্য গরম পানি ব্যবহার করবেন না। গরম পানি চুলের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। গরম পানির পরিবর্তে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। গরম পানি চুলের আর্দ্রতা নষ্ট করে, চুল ভেঙে পড়ার প্রবণতা বাড়ায়, চুল রুক্ষ করে তোলে। কিন্তু কুসুম গরম পানি মাথার ত্বকে আরাম দেয় এবং চুলের স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ।
সূত্র: ভিন্স কেয়ার