মিডিয়া

সাংবাদিককে গুলি করে হত্যার হুমকি, ডিবিএসএফ’র নিন্দা 

দৈনিক দেশ রুপান্তরের অনলাইন লাইভে কম দেখানোর অভিযোগে মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক জিহাদুল ইসলামকে গুলি করার হুমকির প্রতিবাদে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকাস্থ ভোলা সাংবাদিক ফোরাম (ডিবিএসএফ)। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন ডিবিএসএফ সভাপতি আহসান কামরুল ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) যৌথ বিবৃতিতে ডিবিএসএফ নেতৃবৃন্দ বলেন, টকশোতে কম দেখানোর অভিযোগে সাংবাদিককে গুলি করে হত্যার হুমকির ঘটনা নজিরবিহীন। এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে চরম অন্তরায়। এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে সংবাদমাধ্যমে হওয়া যে কোনো টকশোর সাথে জড়িত সাংবাদিকরা আতঙ্কে থাকবেন। স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রসারে এটি কোনোভাবে কাম্য হতে পারে না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, এ ন্যক্কারজনক ঘটনায় জড়িত আকরাম নামে দৈনিক কালবেলার এক সংবাদকর্মীর নাম এসেছে। আমরা মনে করি, কালবেলার মতো সাহসী ও স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙিয়ে কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত হতে পারে না। আমরা আশা করি, কালবেলা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ ও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। নাহলে ডিবিএসএফ এ বিষয়ে কঠোর পন্থা অবলম্বন করতে বাধ্য হবে।

একই সাথে ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকাস্থ ভোলা সাংবাদিক ফোরাম। 

প্রতিবাদলিপির অনুলিপি প্রেস কাউন্সিল, জাতীয় প্রেসক্লাব, হাতিরঝিল থানার, দৈনিক দেশ রুপান্তর, দৈনিক কালবেলা, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটিকে পাঠিয়েছে ঢাকাস্থ ভোলা সাংবাদিক ফোরাম (ডিবিএসএফ)।

এছাড়াও, এ ঘটনায় নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের সংগঠন মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এমআরএ)। বুধবার এক বিবৃতিতে এমআরএর কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ ও সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, টকশো অনুষ্ঠানে নিজের চেহারা কম দেখানোর অভিযোগ তুলে সাংবাদিককে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রিপন গাজী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত রিপন গাজী ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি উল্লেখ করে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ভুক্তভোগী জিহাদুল ইসলাম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. আওলাদ হোসেন বলেন, এক সাংবাদিক নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে একটি জিডি করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জিডিতে ওই সাংবাদিক উল্লেখ করেন, গত ১৪ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিক দেশ রুপান্তরের অনলাইন লাইভ অনুষ্ঠানে রিপন গাজী (যিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা দাবি করেন) গেস্ট হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ‘লাইভে সেই অনুষ্ঠানে তাকে কম দেখানো হয়েছে’- এমন দাবিতে আমার পূর্বপরিচিত বড় ভাই আকরাম হোসেন (মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক) রাত ৯টা ৫৭ মিনিটে আমাকে ফোন করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সের চায়ের দোকানের পাশের গলিতে ডেকে নেয়। সেখানে গেলে একপর্যায়ে রিপন গাজী আমার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে এবং শারীরিক নির্যাতন চালায়।

রিপন গাজী প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বলে: ‘তোকে গুলি করে মেরে ফেলব।’ এরপর ১৬ অক্টোবর রিপন গাজী আমার বাসায় লোকজন পাঠায় এবং মোবাইল ফোনে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। উল্লিখিত বিষয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।