করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ ৮৬ দিন পর বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা উঠতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (১৬ জুন) থেকে মধ্যপ্রাচ্যের কাতার ও ইউরোপের যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে।
তবে নিষেধাজ্ঞা ওঠার দিনই ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারছে না রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বিমান মূলত ঢাকা থেকে লন্ডন রুটে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করতো। তবে ওইদিন ঢাকা-দোহা রুটে একটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে কাতার এয়ারওয়েজ।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সবধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে যাত্রীদের ফ্লাইটে ওঠা ও দেশে প্রবেশের অনুমতি দেবেন।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) থেকে জানানো হয়েছে, সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ফ্লাইট পরিচালনার অনুমিত দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ-উল-আহসান বলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাত ২টায় কাতারের দোহা থেকে একটি ফ্লাইট ঢাকায় আসবে। এক ঘণ্টা অবস্থানের পর ৩টায় যাত্রী নিয়ে কাতার ফিরে যাবে। বেবিচকের নির্দেশনা অনুযায়ী সব ধরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পুরো বিমানবন্দরকে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। বোর্ডিং ব্রিজসহ বিভিন্নস্থানে যাত্রীদের বসার চেয়ারগুলোতে স্টিকার লাগানো হয়েছে। যাত্রীদের ওয়েটিং থেকে শুরু করে বোর্ডিং গেট পর্যন্ত একসিট ফাঁকা রেখে বসার ব্যবস্থা করতে হবে।
ঢাকা থেকে লন্ডন রুটে নিষেধাজ্ঞা উঠলেও ফ্লাইট স্থগিত রেখেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তারা প্রথম ঢাকা-লন্ডন রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করবে ২১ জুন থেকে। বিষয়টি বিমানের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া ২১ জুনের ঢাকা থেকে লন্ডন রুটের টিকিট বিক্রির জন্য ট্রাভেল এজেন্টদের চিঠিও পাঠিয়েছে বিমান। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ২১ জুনের পর সপ্তাহের প্রতি রোববার ঢাকা-লন্ডন রুটে ফ্লাইট চলবে।
নিষেধাজ্ঞার পর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশনের নির্দেশনা ও আমাদের নিজস্ব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। ফ্লাইট পরিচালনা করতে হলে এগুলো মেনেই করতে হবে।
করোনার কারণে গত ২১ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, চীন, হংকং, থাইল্যান্ড ছাড়া সব দেশের সঙ্গে এবং অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল বেবিচক। এরপর আরেকটি আদেশে চীন ছাড়া সব দেশের সঙ্গে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত উড়োজাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা সরকারি সাধারণ ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে পর্যায়ক্রমে ১৪ এপ্রিল, ৩০ এপ্রিল, ৭ মে, ১৬ মে, ৩০ মে এবং ১৫ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
তবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১ জুন থেকে প্রথমে অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর এবং পরে যশোর রুটে ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেয় বেবিচক। এ চার রুটে প্রথম দিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এবং নভোএয়ার ফ্লাইট পরিচালনা করলেও যাত্রী সংকটের কারণে পরের দিন থেকে ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দেওয়া শুরু করে বিমান। এরপর এ চার রুটে ফ্লাইট শুরু করতে পারেনি রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থাটি। ঢাকা/নূর/জেডআর