জাতীয়

সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাভোগী ৩৪ শতাংশ দরিদ্র: সিপিডি

দারিদ্র‌্য বিমোচনের লক্ষ‌্যে সরকারের গৃহীত সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের মধ‌্যে মাত্র ৩৪.৫ শতাংশ দরিদ্র মানুষ। বাকি ৬৫.৫ শতাংশ সুবিধাভোগী দরিদ্র নন।

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ‘উত্তর-পশ্চিমের জেলাসমূহে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নের কার্যকারিতা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এ তথ্য তুলে ধরে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সিপিডি এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশ যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য যেসব কর্যক্রম পরিচালনা করছে, সেখানে দরিদ্র ব‌্যক্তিরা কম সুবিধা পাচ্ছেন। বিপরীতে যারা দরিদ্র নন, তারা বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। বয়স্কভাতা, অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের উপবৃত্তি এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা—এই পাঁচ খাতে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন তারাই, যারা দরিদ্র নন। এসব কর্মসূচির আওতায় যাদেরকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তাদের মধ্যে মাত্র ৩৪ দশমিক ৫০ শতাংশ দরিদ্র।’

দারিদ্র্যপীড়িত কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলার প্রায় দেড় হাজার পরিবারের সদস‌্যদের সঙ্গে কথা বলে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিপিডি।

সিপিডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদেরকে বয়স্কভাতা দেওয়া হচ্ছে তাদের ৬৭ দশমিক ৮০ শতাংশই দরিদ্র নন। একইভাবে মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে উপবৃত্তি পাওয়াদের ৭২ শতাংশ দরিদ্র নন। প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ে উপবৃত্তি পাওয়াদের ৬৩ দশমিক ৮০ শতাংশ দরিদ্র নন।

গাইবান্ধায় ৪৩.৯ শতাংশ দরিদ্র মানুষ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধা ভোগ করছেন। কুড়িগ্রামে ৩০.৪ শতাংশ এবং নীলফামারী ও রংপুরে ২১.৬ শতাংশ দরিদ্র মানুষ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধা পাচ্ছেন।

অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পাওয়াদের ৪৯ দশমিক ৬০ শতাংশ দরিদ্র, বাকিরা দরিদ্র নন। মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়া নারীদের ৪১ দশমিক ৫০ শতাংশ দরিদ্র এবং ৫৮ দশমিক ৫০ শতাংশ দরিদ্র নন। সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অংশ নেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পারভীন আকতার, সিপিডির নির্বাহী পরিচলক ফাহমিদা খাতুন প্রমুখ। আলোচনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।