জাতীয়

বইমেলার প্রবেশপথ আলোহীন, যা বললেন আয়োজকরা

এবা‌রের মেলার প‌রিসর বাড়লেও প্রবেশপথে আলোর ব‌্যবস্থা করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে দর্শনার্থী-লেখক-পাঠককে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। আর আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি থেকে বলা হয়েছে, শিগগিরই আলোর  ব‌্যবস্থা করা হবে।

শুক্রবার (১৯ মার্চ) মেলার দ্বিতীয় দিন। মেলা প্রাঙ্গণে যাওয়ার পথে দেখা গেলো তিনটি গেট রয়ে‌ছে। একটি টিএস‌সির পা‌শে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান গেইট। আরেকটি বাংলা একা‌ডে‌মির উল্টো‌দিকের (কা‌লি বা‌ড়ি) গেট। তৃতীয়টি ইঞ্জি‌নিয়ার্স ইন‌স্টি‌টিউট‌রে পা‌শের গেট। প্রবেশ গেটের পা‌শেই র‌য়ে‌ছে মেলা থে‌কে বের হওয়া গেটগুলোও।

তবে,  টিএস‌সির পা‌শের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান গেটের (মূল ‌গেইট) চারপা‌শে ঘুটঘু‌টে অন্ধকার। দর্শনার্থীরা গেটে এসে থম‌কে দাঁড়া‌চ্ছেন। এরপর ইতস্তত ক‌রে সোহরাওয়ার্দী উদ‌্যানে ঢুক‌ছেন। মূল গেট থে‌কে বইমেলা প্রাঙ্গণে প্রবে‌শের গেট প্রায় ৫০০ গজ দূ‌রে। এই পু‌রো পথ অন্ধকারে ছেয়ে আছে। কো‌নো বা‌তি নেই। বইমেলার বিশাল প্রবেশ পথ, সেখা‌নেও কো‌নো আলো নেই। পা‌শেই বে‌রি‌য়ে যাওয়ার পথ, তাও অন্ধকারে ঢাকা!

আলো না থাকা প্রস‌ঙ্গে গেটের দা‌য়ি‌ত্বে থাকা পু‌লি‌শের একজন কর্মকর্তা ব‌লেন, ‘আলো থাকা না থাকার বিষয় আমা‌দের এখ‌তিয়া‌রে নেই। ত‌বে, এলাকাটা বেশ অন্ধকার। স‌ন্দেহ নেই। এই এলাকায় যেন কোনো অনাকা‌ঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘ‌টে, সে ব্যাপা‌রে আমরা স‌চেতন আছি। থাক‌বো।’

মেলাপ্রাঙ্গণের ভেত‌রেও পর্যাপ্ত  আলো নেই। এ প্রস‌ঙ্গে বিকা‌শের একজন কর্মকর্তা ব‌লেন, ‘আমা‌দের কোম্পা‌নি গত ক‌য়েক বছর যাবৎ বইমেলার স‌ঙ্গে কাজ কর‌ছে। আশা ক‌রি, কোনো ঝা‌মেলা ছাড়া, সুন্দরভা‌বে মেলা সম্পন্ন হ‌বে। গেটে আলো না থাকার বিষয়টা দুঃখজনক।’

প্রতিবছর প্রথম দিন মেলায় আসেন খিলগাঁও থে‌কে লিটন।আলো না থাকা প্রস‌ঙ্গে তি‌নি ব‌লেন, ‘এটা কেমন ব্যাপার হ‌লো? মেলার ভেত‌রেও স্বল্প আলো, গেটে আলোর ব্যবস্থা নেই। মেলায় আসা মানুষজন তো নিরাপত্বাহীনতায় ভুগ‌বে। যত দ্রুত সম্ভব মেলায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে আলোর ব‌্যবস্থা করা দরকার।’

মেলায় দেখা হয় লেখক, সাংবা‌দিক গিয়াস আহ‌মে‌দের স‌ঙ্গে। মেলার গেটে কো‌নো আলোর ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ ক‌রে তি‌নি ব‌লেন, ‘পুরুষরা না হয় অন্ধকা‌র গেট দি‌য়ে মেলায় ঢুক‌বেন। কিন্তু নারী ও শিশুরা তো সন্ধ্যার পর ভ‌য়েই মেলায় আসবেন না।’ এ ব্যা‌পারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে মেলা ক‌মি‌টির প্রতি অনু‌রোধ জানান তিনি।

বাংলা একা‌ডে‌মির তথ্য কে‌ন্দ্রে এ ব্যাপা‌রে জান‌তে চাইলে কোনো মন্তব্য না ক‌রে মেলা ক‌মি‌টির প‌রিচাল‌কের স‌ঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তারা।

কথা হয়, মেলা ক‌মি‌টির প‌রিচালক ড. জালাল আহ‌মেদের সঙ্গে। তিনি ব‌লেন, ‘বিষয়টা দেখ‌ছি। যত দ্রুত সম্ভব, আলোর ব্যবস্থা করা হ‌বে।’

জানতে চাইলে বাংলা একা‌ডে‌মির মহা প‌রিচালক ক‌বি হা‌বিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘অবিলম্বে গেটে আলোর ব্যবস্থা করা হ‌বে।’ 

গতকাল (১৮ মার্চ) ‌বেলা ৩ টায় গণভবন থে‌কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনা ভার্চুয়া‌লি বইমেলা উ‌দ্বোধন ক‌রেন। এরপর সবার জন্য উন্মুক্ত ক‌রে দেওয়া হয় মেলাপ্রাঙ্গণ। তবে, বরাবরের মতোই প্রথম দি‌নে  তেমন দর্শণার্থীর দেখা মে‌লে‌নি। অন্য‌দি‌কে স্টল মা‌লিকরাও তা‌দের স্ট‌লের কাজ পু‌রোপুরি ‌শেষ কর‌তে পা‌রেন‌নি।