খাদ্যে ভেজাল ও দূষণ রোধের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষে প্রয়োজনীয় সংখ্যক মোবাইল ল্যাবরেটরি চালু করা এবং খাদ্য নমুনা বিশ্লেষণের জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে মিনি ল্যাবরেটরি ও ক্যামিকেল স্টোর স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সরকারি অর্থায়নে ৮৮ কোটি ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকার ‘বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুন) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটির বৈঠকে অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে একনেক সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রকল্পটির অনুমোদন দেবেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে- (ক) খাদ্যে ভেজাল ও দূষণ রোধ করার লক্ষ্যে খাদ্য ও খাদ্যোপকরণ তাৎক্ষণিক বিশ্লেষণ সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক মোবাইল ল্যাবরেটরি চালু করা এবং খাদ্য নমুনা বিশ্লেষণের জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এর প্রধান কার্যালয়ে মিনি ল্যাবরেটরি ও ক্যামিকেল স্টোর স্থাপন করা, (খ) বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা, কর্মচারী, অংশীজন এবং সংশ্লিষ্ট খাদ্য ব্যবসায়ীদের নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া, (গ) বিএফএসএ প্রধান কার্যালয়ে ডাটাবেইজ তৈরির মাধ্যমে সারাদেশের খাদ্য স্থাপনা, রেস্তোরাঁ বাজার ইত্যাদির হালনাগদ তথ্য সংরক্ষণ ও নজরদারি কার্যক্রম জোরদার করা, (ঘ) জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য সম্পর্কে জনসাধারণের অভিযোগ, আপত্তি, মতামত, পরামর্শ ও করণীয় সম্পর্কে অবহিত করার জন্য ৯৯৯ এর আদলে জরুরি হটলাইন নম্বর চালু করা এবং (ঙ) জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবসসহ অনুরূপ অন্যান্য দিবসে র্যালি এবং প্রচার/প্রচারণা, টিভি ক্লিপ ভিডিও ইত্যাদি প্রচার এবং বিভিন্ন প্রকাশনা (বুকলেট, লিফলেট, গাইডলাইনস, এসওপি) ইত্যাদি প্রকাশ ও বিতরণের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে সারাদেশে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জানুয়ারি ২০২১ হতে জুন ২০২৪। ২০২০-২১ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়নে কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে (পৃষ্ঠা নং ৮৩১, ক্রমিকঃ ৯৭)। প্রকল্পটি কার্যক্রম বিভাগ হতে ‘উচ্চ অগ্রাধিকার’ প্রকল্প হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সার্ভিল্যান্স কার্যক্রম প্রতিষ্ঠা, মোবাইল ল্যাবরেটরি চালুর মাধ্যমে অন-স্পট খাদ্য পরীক্ষা সুবিধা নিশ্চিত করা, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জন্য ডাটাবেইজ প্রস্তুতকরণ, জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য সম্পর্কে জনসাধারণের অভিযোগ, আপত্তি, মতামত, পরামর্শ ও করণীয় সম্পর্কে অবহিত করার জন্য অনলাইন কল সেন্টার চালু করা, নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারী এবং অংশীজনদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এবং নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা আয়োজন, র্যালিসহ অন্যান্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ।
প্রকল্পটি সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ খাদ্য ও খাদ্যোপকরণ নমুনা বিশ্লেষণে দক্ষতা, মোবাইল /মিনি ল্যাবরেটরি ও ক্যামিকেল স্টোর স্থাপনের মাধ্যমে ধারণ ক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি হ্রাস পাবে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।