রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা দীর্ঘ ২২ বছর বেদখল থাকার পর, আদালতের রায় পেয়ে আজ এর মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এত বছর ধরে মামুনুল হকরা এই মাদ্রাসা দখল করে রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আউয়াল। তিনি নিজে উপস্থিত থেকে উক্ত মাদ্রাসা মূল মালিকদের বুঝিয়ে দেন।
মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সোমবার (১৯ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী মেজিস্ট্রেট আব্দুল আওয়াল।
এর আগে সকালে মাহফুজুল হক মাদ্রাসার দখল ছাড়ার পর সকাল ১১টার দিকে মাদ্রাসাটি ‘অবৈধ দখল মুক্ত’ করতে যায় ঢাকা জেলা প্রশাসন।
বেলা ১২টার দিকে পুলিশের উপস্থিতে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাদ্রাসার ভেতরে প্রবেশ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী মেজিস্ট্রেট আব্দুল আওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, মাদ্রাসাটির সামনে আমরা দাঁড়িয়ে আছি সেটা একটি মসজিদ ও ওয়াকফ এস্টেট। এই ওয়াকফ এস্টেটে আগে বিভিন্ন ইস্যু ছিল। কোর্টে বিভিন্ন মামলা চলমান ছিল। মামলা চলমান থাকার সুবাদে একটি পক্ষ এটার দখলে ছিল।
তিনি আরও বলেন, এই মাসে আমরা ওয়াকফ প্রশাসনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে নির্দেশিত হয়েছি যে, এখানে যারা অবৈধ দখলদার আছে তাদের উচ্ছেদ করে মাদ্রাসাটি নির্বাচিত বৈধ কমিটির কাছে দখল হস্তান্তর করার জন্য। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে আসেছি।
‘আমাদের এখানে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার লোকজন আছেন। এ ছাড়া, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকেরা এখানে আছেন। তাদের সহযোগিতায় নতুন যে কমিটি ওয়াকফ এস্টেট থেকে গঠন করা হয়েছে তাদের আমরা দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি।’
জামি'আ রাহমানিয়া আরাবিয়া কওমি মাদ্রাসা ১৯৮৮ সালে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে নিবন্ধিত জামি'আ রাহমানিয়া আরাবিয়া কওমি মাদ্রাসা। ৫তলা বিশিষ্ট এই মাদ্রাসায় ১ হাজার ছাত্রকে শিক্ষা দেওয়া হতো। শুরু থেকেই মাদ্রাসার মনোগ্রাম ট্রেড মার্কস থেকে নিবন্ধনকৃত ছিলো।
মাদ্রাসার প্রথম প্রিন্সিপ্যাল ছিলেন মাওলানা আবদুল গাফফার (মরহুম )। ১৯৯০ সালে অবসর নেওয়ার পর তার জায়গায় মাওলানা আলী আসগরকে প্রিন্সিপ্যাল নিযুক্ত করা হয়। ১৯৯২ সালে মাওলানা আলী আসগর পদত্যাগ করলে তার স্থলে মাওলানা আজীজুল হককে প্রিন্সিপ্যাল নিযুক্ত করা হয়।
মাওলানা আজীজুল হককে প্রিন্সিপ্যাল নিযুক্ত হওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করতে থাকেন। নিজ রাজনৈতিক দলের মিটিং, মিছিল, লংমার্চ, রোড মার্চে তিনি মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যবহার করে তাদের পড়াশোনার ক্ষতি করেন। তার এই স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তাকে বিভিন্নভাবে সতর্ক করে দওয়া হয়। তারপরও তিনি অরাজনৈতিক মাদ্রাসার ছাত্রদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার কারণে কমিটির ৮৯ নম্বর অধিবেশনে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।