ঈদ পরবর্তী সরকার ঘোষিত লকডাউনের দ্বিতীয় দিন চলছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আজও লোকজন তেমন বের হয়নি। সড়কে জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহনসহ রিকশা ও ভ্যান চলাচল করছে। ব্যক্তিগত গাড়ি সড়কে নেই বললেই চলে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। সেখানে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
শনিবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর খিলগাঁও, মালিবাগ, মৌচাক, রামপুরা ও বাড্ডা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, লকডাউনের কারণে সকাল থেকেই সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এছাড়া, সড়কে সাধারণ মানুষের চলাচল তুলনামূলক কম। ঈদের আগের লকডাউনের চেয়ে এবার মানুষের বাইরে বের হওয়ার প্রবণতা অনেক কম বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে ব্যতিক্রম কিছু ঘটনা ঘটছে। কিছু মানুষ বিনা কারণে বাইরে বের হচ্ছেন। তাদেরকে বিভিন্ন চেকপোস্টে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বের হওয়ার সঠিক কারণ বলতে না পারায় অনেককে জরিমানাও করা হয়।
এদিকে, শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর মৌচাক এলাকায় মোটরসাইকেলে করে একজন গর্ভবতী নারীকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন একজন উবার চালক। বেশি টাকার বিনিময়ে তিনি ওই নারীকে মগবাজার এলাকায় আদ-দ্বীন হাসপাতাল নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে মৌচাক মোড়ে পুলিশের চেকপোস্টে গতিরোধ করা হয় মোটরসাইকেলটির। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, আদ-দ্বীন হাসপাতালে নেওয়ার জন্য ওই নারী মোটরসাইকেল ভাড়া করেছেন। তবে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য চালক ২০০০ টাকা দাবি করেছেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তাৎক্ষণিক উবার চালককে জরিমানা করেছেন। পাশাপাশি ওই নারীকে পুলিশের গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, খিলগাঁও এলাকার চেকপোস্টে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে একটি প্রাইভেটকার চালককে জরিমানা করা হয়েছে। প্রাইভেটকার চালক ফরিদপুর থেকে যাত্রী নিয়ে গুলশানে যাচ্ছিলেন। গাড়ির কাগজপত্রের মেয়াদ না থাকায় সেই গাড়িচালককে জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে গাড়িতে থাকা যাত্রীদের সতর্ক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৌচাক মোড় এলাকায় দায়িত্বরত রমনা থানার উপপরিদর্শক মোহাইমিনুল হাসান রাইজিংবিডিকে বলেন, গর্ভবতী নারীকে বহনকারী মোটরসাইকেল চালকের কোনো কাগজপত্র ছিল না। ওই মোটরসাইকেল চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গর্ভবতী নারীকে নিরাপদে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
খিলগাঁও এলাকায় চেকপোস্টে দায়িত্বরত সবুজবাগ থানার ট্রাফিক জোনের সার্জেন্ট অনিক ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, সকাল থেকেই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল নেই বললেই চলে। অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজে দুই-একটি ব্যক্তিগত গাড়ি সড়কে চলাচল করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে দুই একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটছে। আমরা সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এদিকে, রাজধানীর এলিফেন্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, হাতিরপুল, শাহবাগ এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় রিকশাসহ তেমন কোনো যানবাহন চলছে না। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হননি। শাহবাগ এলাকায় যাদের রাস্তায় দেখা গেছে, অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশই ডাক্তারের কাছে যাচ্ছিলেন।
খালি রিকশা নিয়ে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করায় কয়েকটি রিকশা জব্দ করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। প্রত্যেককে এক ঘণ্টা করে আটকে রেখে তারপর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান দায়িত্বরত পুলিশ সার্জেন্ট জাফর ইমাম। রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি কম বলেও জানান তিনি।