‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী রাজনৈতিক চিন্তাধারার কারণেই বাংলাদেশ জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। এর ফলেই দেশের মানুষ এখনো স্বল্পমূল্যে জ্বালানি ব্যবহার করতে পারছে।’
সোমবার (৯ আগস্ট) জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে ও সিআরআই এর সহযোগিতায় ‘বাংলাদেশের জ্বালানী নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর অবদান: বর্তমান প্রেক্ষিত এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক বিশেষ ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
ওয়েবিনার অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং উপকমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূইয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘জ্বালানি শক্তিকে আরও বিকশিত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের যে প্রতিশ্রুতি আমরা নির্বাচনের সময় দিয়েছিলাম তা আমরা পূরণ করতে পেরেছি, আমরা এখন কাজ করছি সারা দেশে দ্রুততম সময়ে শতভাগ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে, তখন মাত্র ৩২শ মেগাওয়াট বিদ্যুত নিয়ে শুরু করেছিলাম। আমরা তখন এটাকে বাড়িয়ে মোটামুটি স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে নিয়ে গিয়েছিলাম। পরবর্তীতে যখন আমরা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসি, তখন আমরা পাই তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সেখান থেকে বাড়িয়ে এখন আবার আমরা বিদ্যুতে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। ইচ্ছা থাকলে যে উপায় হয় তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব সারা বাংলাদেশ আজ আলোর পথযাত্রী।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘জাতির পিতা পাঁচটি গ্যাস ক্ষেত্র ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, বলেই আজ দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। বর্তমানে যে উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে তা বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন আমাদের যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলোকে পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে টেকসই করে গড়ে তুলতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্বের প্রতি তিনি নজর দিয়েছিলেন, নজর দিয়েছিলেন স্বনির্ভরতার দিকে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে।’
ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, ‘১৯৭৫ সালে ৯ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র (তিতাস, বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, রশিদপুর ও কৈলাশটিলা) নামমাত্র মূল্যে বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিলো মাত্র ৪.৫ মিলিয়ন পাউন্ড। এর উপর ভিত্তি করেই এখন দাঁড়িয়ে আছে দেশের জ্বালানি খাত।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, গোটা উন্নয়নশীল বিশ্বের একমাত্র সরকার প্রধান যিনি জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়টাকে জাতীয় নিরাপত্তার সমর্থক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।’
এসময় আলোচক হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. সেলিম মাহমুদ এবং গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বেগম রুখসানা নাজমা ইসহাক।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপকমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. রনক আহসান।