জাতীয়

বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের ব্যবসায়িক সম্পর্ক সামান্য: ড. আতিউর 

দুই দেশের বাণিজ্য বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সামান্য। বিষয়টি আমাদের তেমন নজরে নাই। আঞ্চলিক দেশ হিসেবে একটু পর্যবেক্ষণ করা দরকার। এর বেশি আপাতত বলার কিছু নেই।’

আফগানিস্তানে একের পর এক আঞ্চলিক রাজধানী দখলের পর রোববার (১৬ আগস্ট) বিনা বাধায় রাজধানী কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেয় তালেবান গোষ্ঠি। বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে এখন প্রধান আলোচনার বিষয় হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন- দেশটির সঙ্গে যে বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে তা বলা বা উল্লেখ করার মত নয়। আর তালেবানের উত্থান পরবর্তী পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি শপথ না নেওয়া পর্যন্ত নতুন সরকারকে স্বাগত জানাবে না বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এমন তথ্যই জানিয়েছন।

এফবিসিসিআই থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে- আফগানিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক একেবারেই সামান্য। তবে বাংলাদেশ দেশটি থেকে বেশি আমদানি করে এবং রপ্তানি করে কম।

আফগানিস্তান থেকে আমদানি পণ্যে মধ্যে বাদাম, কাঁচা ফল, বস্ত্র শিল্প উপদান, প্লাস্টিক ও রাবারজাত পণ্য অন্যতম। বাংলাদেশ থেকে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, সবজি, টেক্সটাইল ফাইবার, সুতা এবং কাপড় রপ্তানি হয়ে থাকে। এছাড়া বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং শিল্প ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ রপ্তানি হয়।

জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশ থেকে আফগানিস্তানে রপ্তানির পরিমাণ ৬২ লাখ ৬০ হাজার ডলার, আমদানি ৮১ লাখ ডলার। ওই বছর বাণিজ্য ঘাটতি ১ লাখ ৮৪ হাজার ডলার।

আর ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ আরও কমে ৫৭ লাখ ৭০ হজার ডলার হয়েছে। আমদানি হয়েছে ৯২ লাখ ডলার। এই হিসেবে ঘাটতি বাণিজ্য হয়েছে ৩৪ লাখ ৩০ হাজার ডলারের।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের বাণিজ্য সমস্যা হওয়ার কোনো কারণ নাই। তাদের সঙ্গে আমাদের তেমন উল্লেখ করার মতো বাণিজ্য নাই। একটি বিষয় খেয়াল রাখা দরকার, আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি কী হয়।’

তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন- দেশ হিসেবে আফগানিস্তানে সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীক গুরুত্ব নাই। ভার-পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তারা গুরুত্বপূর্ণ। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কোনো উদ্বেগ নেই।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিধ্বংসী সামরিক অভিযানে আফগানিস্তানের ক্ষমতা থাকা তালেবান গোষ্ঠি ক্ষমতাচ্যুত হয়। টানা দুই দশক দেশটিতে সামরিক নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে যুক্তরাষ্ট্র এবং নেটো জোট। বাইডে সরকারের ঘোণার ভিত্তিতে জুলাই মাসে রাতের অন্ধকারে মার্কিন সৈন্যদের বাগরাম বিমানঘাঁটি ত্যাগ করার পর মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশটির পুরো নিয়ন্ত্রণে নেয় তালেবান।