জাতীয়

বছরে ১ লাখ টন আম রপ্তানির লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ

প্রতি বছর ১ লাখ টন করে আম রপ্তানির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

সোমবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে এক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে তিনি এ নির্দেশ দেন। ‘আম রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য উন্নত ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এ জাতীয় কর্মশালার আয়োজন করে হর্টেক্স ফাউন্ডেশন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বছরে ২৫ লাখ টন আম উৎপাদন হয়। অথচ, রপ্তানি হয় মাত্র কয়েকশ টন। বছরে ১ লাখ টন আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। সে লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন, রোডম্যাপ প্রণয়ন ও আমের নতুন বাজার খুঁজে বের করতে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমের রপ্তানি বাড়াতে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। রপ্তানির ক্ষেত্রে বাধাগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসনে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে নিরাপদ আমের নিশ্চয়তা দিতে তিনটি ভ্যাকুয়াম হিট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে। উৎপাদন থেকে শিপমেন্ট পর্যন্ত আম নিরাপদ রাখতে উত্তম কৃষিচর্চা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট দেওয়ার কাজ চলছে। এর ফলে চলতি বছর গত বছরের তুলনায় আম রপ্তানি ৫ গুণ বেড়েছে। আগামীতে রপ্তানির পরিমাণ অনেক গুণ বাড়বে।’

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ এবং এনএটিপি-২ প্রকল্পের পরিচালক মো. মতিয়ার রহমান। কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংস্থার প্রধান, আমচাষি, ব্যবসায়ী, শাকসবজি ও ফল রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধিরা কর্মশালায় অংশ নেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, দেশে প্রতিবছর আমের উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু উৎপাদনের তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ অনেক কম। ২০১৯-২০ সালে দেশে প্রায় ২৫ লাখ টন আম উৎপাদিত হয়েছে। এর বিপরীতে আম রপ্তানি হয়েছে ২৮৩ মেট্রিক টন। তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের ফলে চলতি বছর ২০২০-২১ সালে ১ হাজার ৬২৩ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৫ গুণের বেশি।

আরও জানানো হয়, দেশে উৎপাদিত আমের প্রায় ২৫ শতাংশ সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে নষ্ট হয়। খিরসাপাত আমের ক্ষেত্রে ৩৭ ও ফজলি আমের ২৯ শতাংশ নষ্ট বা অপচয় হয়। এতে বছরে ক্ষতি হয় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

আম রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য নতুন বাজার অনুসন্ধান, রপ্তানি চাহিদা অনুযায়ী উন্নত জাত নির্বাচন, ফাইটোস্যানিটারি পদ্ধতি ও আমদানিকারক দেশের উত্তম কৃষিচর্চা মেনে আম উৎপাদন, সার্টিফিকেশন, উন্নত প্যাকিং, উন্নত সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থা, রপ্তানি কার্যক্রমে দক্ষতা, সচেতনতা ও প্রশিক্ষণ, বিমানবন্দরে সুষ্ঠু কার্গো ব্যবস্থাপনার ওপর কর্মশালায় গুরুত্ব আরোপ করা হয়।