কথাসাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, গবেষক, বাংলা একাডেমির ফেলো ও সাবেক পরিচালক বশীর আল-হেলাল আর নেই। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) তিনি মারা যান। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা, কবি ও প্রাবন্ধিক পিয়াস মজিদ।
আরও পড়ুন: একাকী এক কথাসাহিত্যিক
পিয়াস মজিদ জানান, ‘ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস’ এবং ‘বাংলা একাডেমির ইতিহাস’- বইয়ের লেখক, বাংলা একাডেমির সাবেক পরিচালক বশীর আল-হেলালের মরদেহ আজ বিকেল ৫টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে। সেখানে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
বশীর আল-হেলালের জন্ম ১৯৩৬ সালের ৬ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামের মীর পাড়ায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই জড়িয়ে পড়েন ছাত্ররাজনীতি ও কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতির সঙ্গে। এ সময় থেকেই লেখালেখি করতেন। সে সময়ই কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গল্পের বই ‘স্বপ্নের কুশীলব’।
১৯৫৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় বিভাগে বাংলায় এমএ পাস করে চাকরি নেন কলকাতায় হজ কমিটিতে। তখন কলকাতা থেকে মুসলমানদের জন্য একটি পত্রিকা বের হতো। হজ কমিটিতে চাকরির পাশাপাশি তিনি এই পত্রিকায়ও কাজ করতেন।
১৯৬৮ সালের শুরুর দিকে মাকে নিয়ে চলে আসেন ঢাকা। ঢাকায় আসার পর ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০-এর নির্বাচন এবং ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালের শুরুতে সহ-অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হন বাংলা একাডেমিতে। প্রায় চব্বিশ বছরের কর্মজীবন বাংলা একাডেমিতে কাটিয়ে ১৯৯৩ সালে পরিচালক পদে দায়িত্ব শেষে অবসর গ্রহণ করেন। গ্রামীণ ও শহুরে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনকে আরও অর্থবহ করতে জীবনধর্মী ও সমাজ সচেতনতামূলক ছোটগল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। অসংখ্য গল্প লিখেছেন।
প্রকাশিত গল্পের বইয়ের মাঝে রয়েছে- ‘প্রথম কৃষ্ণচূড়া’, ‘আনারসের হাসি’, ‘বিপরীত মানুষ’, ‘ক্ষুধার দেশের রাজা’, ‘গল্পসমগ্র-প্রথম খণ্ড’। প্রকাশিত উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- ‘কালো ইলিশ’, ‘ঘৃতকুমারী’, ‘শেষ পানপাত্র’, ‘নূরজাহানদের মধুমাস’, ‘শিশিরের দেশে অভিযান’ ও ‘যে পথে বুলবুলিরা যায়’।