জাতীয়

‘ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করবেন না’

ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে কেউ যাতে ব্যবহার করতে না পারেন। এর পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়কে আইনি সুরক্ষা দিতেও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর কবি বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আয়োজিত ‘স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামায়াতের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধে নাগরিকদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকে জানলে-পড়লে বুঝতে পারবেন অসাম্প্রদায়িকতা কাকে বলে। আজকের বাংলাদেশে যা ঘটছে, সেটা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ নয়।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) বলেন, ৭৫ পরবর্তী শাসকদের চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ‌্যই ছিল প্রতারণা, আদর্শহীনতা আর মিথ্যার বেসাতি। সামরিক বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাকারী ছিলেন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান। দীর্ঘদিন বাঙালী সত্য ইতিহাস জানতে পারেনি। বিকৃত ইতিহাসকারী এসব শাসকদের বিচার চাই, সেটা মরণোত্তর হলেও। 

তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। মিথ্যা চর্চার মধ্য দিয়ে চলা বাংলাদেশে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় এসে উন্নয়ন, সত্য ইতিহাস, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল- এরকম অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এত কিছুর পরও মূল সমস্যা হচ্ছে আমাদের মানসিকতা। এই মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।

ভাস্কর শিল্পী রাসা বলেন, এই জাতীর মুক্তির উপায় জানতেন বঙ্গবন্ধু। তিনি আজ নেই বলে তাঁর আদর্শকে জানার জন্য বেশি করে তাঁকে পড়তে হবে, জানতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, সবাইকে সত্যি ইতিহাস জানার পাশাপাশি মানুষ হতে হবে।

শিল্পী রাসা বলেন, বঙ্গবন্ধু বলে গেছেন, ‘আমি প্রথমত মানুষ। এরপর আমার ধর্মীয় পরিচয়। হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খৃষ্টান সবাই আমার দেশের মানুষ। সবাই বাঙালী। সবারই সমান অধিকার’। সেই বঙ্গবন্ধুর দেশে কেন এসব হচ্ছে?

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন বলেন, ক্ষমতায় থাকাবস্থায় জিয়ার নির্দেশে বিচার বহির্ভূত ১২০০ সেনা সদস্যকে হত্যা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এসব পরিবারের পাশে আছে, থাকবে। আমরা এসব হত্যার জন্য জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করছি।

তিনি বলেন, হিন্দুদের বাড়ি-ঘর লুটপাট, মন্দির-প্রতিমা ভাঙা এসব অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ। আমরা এসব কাজে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। পাশাপাশি জানতে চাই, ওই সব এলাকার আইন রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তখন কোথায় ছিলেন, কী করেছেন? তাদেরকেও জবাবদিহিতার পর্যায়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।