জাতীয়

‘তেলের দাম বৃদ্ধি মরার উপর খাঁড়ার ঘা’

বাংলাদেশ বাস–ট্রাক অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাকেশ ঘোষ বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আমাদের উপরে ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ এর মতো।  করোনার মধ্যে আমরা ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতির মধ্যে আছি। এখান থেকেই বের হতে আমাদের বর্তমানে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাইজিংবিডিকে তিনি এ কথা বলেন।

আজ থেকে দেশে ‘লোকসান কমাতে’ বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এর ফলে পরিবহন খরচ বাড়তে পারে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রাকেশ ঘোষ রাইজিংবিডিকে বলেন, আমরা কর্মসূচি এখনো দেইনি। তবে সম্মিলিতভাবে বিকেল ৪টায় আমাদের একটি বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠক শেষে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাতে পারবো। 

তিনি বলেন, আমরা আজ বিকেলে ঢাকার সব ধরনের পরিবহন সংগঠনের নেতারা একসঙ্গে বসবো।  সেখানে আমরা আলোচনা করে এর সমাধান বের করার চেষ্টা করবো।  কারণ এমন করে দাম বাড়ালে পরিবহন চালানো সম্ভব না। যদিও আমরা এখনো কেন্দ্রীয়ভাবে পরিবহন বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। বিকেলে বৈঠকের পরেই জানানো যাবে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হয়। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ রাইজিংবিডিকে বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং বিআরটিএ-এর সাথে আমরা এরই মধ্যে কথা বলেছি, তারা আমাদের কাছে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা চিঠি আকারে চেয়েছেন। আমরা আজই চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে সমিতির পক্ষ থেকে আমরা সভা করেছি। আবার বিকেল ৪টায় একটা সভা আছে। সেখানে আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেব কি করা যায় সে বিষয়ে।

তবে সবাই মতামত দিয়েছেন জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ভাড়া বাড়ানো ছাড়া কোন উপায় নেই। সমিতির মতামত মাথায় রেখেই আমরা প্রস্তাবনা তৈরি করব এবং মন্ত্রণালয়ে জমা দেব বলেন তিনি।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে এ বিষয়ে কিছু জানেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না আমাদের কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে আঞ্চলিক সমিতিগুলো যদি এমন সিদ্ধান্ত সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু আমরা আজ বৈঠকের পরে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেব। 

প্রসঙ্গত, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। বুধবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে জ্বালানি তেলের নতুন দাম কার্যকরও হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে থাকায় ‘লোকসান কমাতে’ দেশের বাজারেও এই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বর্তমান ক্রয়মূল্য বিবেচনা করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ডিজেলে লিটারপ্রতি ১৩.০১ এবং ফার্নেস অয়েলে লিটারপ্রতি ৬.২১ টাকা কমে বিক্রয় করায় প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বিভিন্ন গ্রেডের পেট্রোলিয়াম পণ্য বর্তমান মূল্যে সরবরাহ করায় মোট ৭২৬.৭১ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার শুধু ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটার ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা পুনঃনির্ধারণ করেছে।