মাত্র এক সপ্তাহ আগেই কন্যা সন্তানের বাবা হন ফায়ার ফাইটার মনিরুজ্জামান। কিন্তু ছুটি না পাওয়ায় বাড়িতে যেতে পারেননি তিনি। আগামী সপ্তাহেই বাড়ি যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এরই মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে লাশ হলেন তিনি। রোববার (৫ জুন) সকালে মনিরুজ্জামানের পোড়া মরদেহ উদ্ধার করে তার সহকর্মীরা।
সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোয় বিস্ফোরণে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ফায়ারকর্মী রয়েছেন ৯ জন। রাতের অন্ধকারে খবর পেয়েই আগুন নেভাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। জীবন বাঁচানোর যুদ্ধে এসে তারা প্রাণ দিয়ে গেলেন। এর মধ্যে নিখোঁজ রয়েছেন ৩ জন। আহত অবস্থায় সিএমএইচে ১৪ ও ঢাকায় নেওয়া হয়েছে ২ জনকে।
জানা গেছে, আহত-নিহতরা সবাই কুমিরা ও সীতাকুণ্ডের ফায়ারকর্মী। নিহত ফায়ার সার্ভিস সদস্যের মধ্যে ৪ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তকৃতরা হলেন- লিডার নিপুন চাকমা, নার্সিং অ্যাটেনডেন্ড মনিরুজ্জামান, ফায়ার ফাইটার আলাউদ্দীন ও শাকিল।
আরেক নিহত ফায়ারকর্মী আলাউদ্দিনের বাড়ী নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে। সে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তার ৩ বছরের একটি ছেলে আছে।
এদিকে, আলাউদ্দিনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় মা মমতাজ বেগম। বন্ধুবান্ধব ও এলাকাবাসী মেনে নিতে পারছেন না এই মৃত্যুর সংবাদ।
সহকর্মীরা জানান, সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার খবর পেয়েই ফায়ার সার্ভিসের অন্য টিমের সঙ্গে মনিরুজ্জামান ও আলাউদ্দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। কিন্তু কনটেইনারে যে ভয়াবহ দাহ্য পদার্থ ছিলো তা তাদের কারো জানা ছিলো না। এমনকি কেউই বিষয়টি তাদের জানায়নি। ফলে কনটেইনারের কাছাকাছি গিয়ে আগুন নেভানোর সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফায়ারকর্মীরা মারা যান।