‘খালেদা জিয়া বলেছিল পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবে না’ জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়া আসুন, দেখে যান পদ্মা সেতু হয়েছে।
শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত দলের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। সেজন্য তিনি সারাটা জীবন সংগ্রাম করেছেন, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের মানুষ অস্ত্র হাতে দেশ স্বাধীন করেছেন। মাত্র সাড়ে ৩ বছরের যুদ্ধ-বিধ্বস্ত একটি দেশকে গড়ে তুলেছিলেন তিনি। দুর্ভাগ্য আমাদের, ৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির পিতাসহ তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি যখন দেশে আসি; তখন লক্ষ্য ছিল মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করেছি। আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ওয়াদা ছিল, প্রত্যেক ঘরে আলো জ্বলবে। আজকে প্রত্যেক ঘরে আলো জ্বলে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, এই পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ২০০১ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম। খালেদা জিয়া সেটি বন্ধ করেছিল। পরে ক্ষমতায় এসে আবার পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করি। খালেদা জিয়া বলেছিল, পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবে না। আজকে খালেদা জিয়াকে বলতে চাই, আসুন দেখে যান- পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে কিনা।
এসময় বুস্টার ডোজ নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সবাইকে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া বন্যার জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। পদ্মা সেতু করতে গিয়ে যারা জমি দিয়েছেন, তাদের ঘর-জমি জীবিকা করে দিয়েছি। ঠিক সেভাবে দেশের প্রত্যেক মানুষ যাতে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে পারে, সেই ব্যবস্থা করে দেব। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমার পরিবার জীবন দিয়ে গেছে। আমি আর আমার ছোট বোন বেঁচে আছি। এই সেতু করতে গিয়ে আমাদের নামে অনেক মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। আমাদের পরিবারকে কতটা যে মানসিক যন্ত্রণা দিয়েছে! একটাই লক্ষ্য ছিল, এই সেতু করে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবই।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে খাদ্যাভাবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কোনও জমি যেন অনাবাদী না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাবা-মা ভাই সব হারিয়ে পেয়েছি আপনাদের। আপনাদের মাঝেই তাদের স্নেহ পেয়েছি। আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সব ত্যাগ স্বীকার করতে আমি প্রস্তুত। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে দেব।