জাতীয়

‘তামাক আসক্তি মুক্তি’ শীর্ষক কর্মশালা বন্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ

বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ফিলিপ মরিস (পিএমআই)-এর অর্থপুষ্ট ফাউন্ডেশন ফর এ স্মোক-ফ্রি ওয়ার্ল্ড (এফএসএফডব্লিউ)’র সহায়তায় ধূমপানের ক্ষতি হ্রাসে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্লাইন্ড মিশন (বিবিএম)। সংগঠনটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামকে সঙ্গে নিয়ে তামাক আসক্তি মুক্তি (টোব্যাকো সিসেশন) বিষয়ে আগামী ২৭ মার্চ একটি ওয়ার্কশপ আয়োজনেরও উদ্যোগ নিয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পরপরই সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরবে ফাউন্ডেশন ফর এ স্মোক-ফ্রি ওয়ার্ল্ড এর কার্যক্রমে সহায়তা না করতে এবং এই ওয়ার্কশপটি বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি)।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘প্রজ্ঞা’ (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এর নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞা জানিয়েছে, পিএমআই’র অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত ‘ফাউন্ডেশন ফর এ স্মোক-ফ্রি ওয়ার্ল্ড’র নানা তৎপরতা জনস্বাস্থ্য এবং তামাকবিরোধী কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এফএসএফডব্লিউ মূলত ই-সিগারেটসহ বিভিন্ন ধরনের ভ্যাপিং পণ্যের ব্যবহার ও বাজারজাতকরণকে উৎসাহিত করে। এ কারণেই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পরপরই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, তামাক কোম্পানির অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত এই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের সুস্পষ্ট স্বার্থ সংঘাত রয়েছে। এ কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ফাউন্ডেশনের সব ধরনের সহযোগিতা কিংবা যৌথ উদ্যোগ প্রত্যাহার করবে।

প্রজ্ঞা আরও জানিয়েছে, সরকার এবং জনস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এই নীতি অনুসরণের আহ্বান জানানো হয়। এছাড়াও ডব্লিউএইচও এফসিটিসি সেক্রেটারিয়েট এক পৃথক বিবৃতিতে বলেছে, ‘তামাক কোম্পানির অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত এই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যেকোনও সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড হবে এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’

এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রজ্ঞা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশেও সংগঠনটির তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতসহ বেশ কিছু দেশ ‘ফাউন্ডেশন ফর এ স্মোক-ফ্রি ওয়াার্ল্ড’র বিতর্কিত কার্যক্রম প্রতিহত করতে সরকারিভাবে সংগঠনটির সঙ্গে কাজ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও বাংলাদেশে এ ধরনের কোনও পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। এফসিটিসি’র স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশেরও উচিত হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী বিতর্কিত এই সংগঠনটির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হওয়া এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্লাইন্ড মিশন (বিবিএম)-সহ সব বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের উচিত হবে জনস্বাস্থ্য বিরোধী এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত না করা।