জাতীয়

আগুনে ছাই হলো হাজারো স্বপ্ন

বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ঘটনায় আজ সকালে পুড়ে যাওয়া দোকানের কাছে এসে দোকানের মালিকরা দেখছেন তাদের জীবনের শেষ সম্বল কিভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তারা জীবনেও ভাবেনি তাদের এমন একটি ভোর দেখতে হবে। হাজারো ব্যবসায়ী ঈদকে সামনে রেখে নতুন পুঁজি খাটিয়েছিলেন, আগুনে তাদের সর্বস্ব গেছে।

বুধবার (৫ এপ্রিল) সকাল আটটায় বঙ্গবাজারে এসে দেখা যায়, সবুজ মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী তার দোকান চিহ্নিত করে ক্যাশ বাক্স বের  করে পুড়ে যাওয়া টাকাগুলো দেখছেন আর কাঁদছেন।

তিনি বলেন, এরকম একটা অবস্থা দেখার জন্য কোনদিন প্রস্তুত ছিলাম না। আমার তিনটি দোকানে ঈদ উপলক্ষে প্রায় কোটি টাকার পণ্য তুলেছিলাম। আমি এখন পথের ফকির হয়ে গেছি।

সবুজ মিয়া বলেন, কিছু চাপা আগুন রয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। আমার দোকানের একটি মালও সরাতে পারিনি। এখন আল্লাহ ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই। বাসা ভাড়া ও পরিবার নিয়ে কি করে বাঁচবো সেই চিন্তায় করছি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের ধ্বংসস্তূপ থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। যেখানে আগুন দেখা যাচ্ছে সেখানেই নেভানোর কাজ করছেন তারা। এ সময় ভেজা ও ফেলে দেওয়া কাপড়ের স্তূপ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ তদারকি করতে এসে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল এই ভবনকে আমরা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছি এবং ব্যানার টাঙিয়েছি। এরপর ১০ বার নোটিশ দিয়েছি। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে যা যা করা সম্ভব ছিলো, আমরা করেছি। তারপরও এখানে ব্যবসা চলছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার পর বাতাস থাকায় দ্রুতই তা ছড়িয়ে পড়ে। একে একে আগুন নেভাতে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট। বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীও যোগ দেয় সেই কাজে। ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, আনসারও। পানি আনতে নামে হেলিকপ্টারও। পরে সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।