জাতীয়

মে দিবসেও ব্যস্ত তারা

শহিদুল মিয়া। বয়স ৬০ এর কাছাকাছি। তার সঙ্গে আছেন আরও তিনজন।

সোমবার (১ মে) সকাল ৯ টার দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় চার জন মিলে পাঁচতলা একটি বাড়ি থেকে সিঁড়ি বেয়ে ঘরগৃহস্থলী মালামাল নামাচ্ছিলেন। নিচেই ছিলো ভ্যানগাড়ি দাঁড়ানো। মাথায় করে বস্তাভর্তি মাল নামানোর সময় হাকডাক ছাড়েন শহিদুল মিয়া, ‘এই মাল যেন নষ্ট না হয়’। বাকিরাও সাড়া দেন, ‘ওস্তাদ ঠিক আছে’।

এভাবে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা ধরে মাল নামান তারা। মে দিবসে এভাবেই ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। 

বাসা পাল্টানোর কাজে শহিদুল মিয়ারা ব্যস্ত থাকেন মাসের শুরু ও শেষের দিন। শহিদুল মিয়াদের চোখের সামনে ভাসে বাড়িওয়ালাদের রুদ্র মূর্তি ও ভাড়াটিয়াদের করুন আর্তি।  শহিদুল মিয়ার সহকারীর কাছে এই প্রতিবেদক জানতে চান, আজ শ্রমিক দিবস। আজও কাজ করছেন। তখন তিনি হাসতে হাসতে বলেন, ‘কাজ না করলে হবে?।’ 

তারা জানান, এই কাজ করে যাচ্ছেন প্রায় ১৭/১৮ বছর। মাসের শেষের কিছুদিন আর শুরুর কিছুদিন কাজের চাপ থাকে। আর বাকি  সময় ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। এদিন তপ্ত দুপুরে পিচঢালা কালো পথ দিয়ে যখন শহিদুল মিয়ার ভ্যান গাড়ি চলছিল তখন তার শরীরের ঘাম ঝরে পড়ছিল মাটিতে। এভাবেই কেটে যায় তাদের দিনগুলো।

শহিদুল মিয়া জানান, ওস্তাদ-সাগরেদ মিলে তারা একটি টিনশেড বাসায় থাকেন। যে টাকা আয় করেন তাতে টানাপোড়েনে দিন কাটাতে হয়। বউ-বাচ্চাদের কষ্টের কথা ভেবে একা আছেন ঢাকায় । কাজ করলেই খাবার মেলে। 

তিনি বলেন, দিন দিন যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, তাতে চলতে খুব কষ্ট হয়। এই গরমে ভ্যান চালানো অনেক কষ্টের। আয়-রোজগার কম তাই রাস্তায় নামতে হয়।

মে দিবস সম্পর্কে জানতে চাইলে মৃদু হেসে শহিদুল মিয়া বলেন, ‘শুনছি। তয় এই দিবসের কোনো সুযোগ-সুবিধা পাইনি। সকালে দেখছি কয়েকজনকে পহেলা মে'র গেঞ্জি পরে লাল ফিতা মাথায় বেঁধে মিছিলে যেতে। আমারেও ডাকছিল। কামে থাকায় যাইতে পারিনি।’

পড়ুন

পুরুষের সমান কাজ, তবুও বেতন কম নারীর

পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা স্থায়ী চাকরির নিশ্চয়তা ও সম্মান পাক

ঝুঁকি নিয়ে জীবনযুদ্ধে শিশুরা

 মে দিবস: কে শুনবে নীরব কান্না?