তামাক চাষ বাংলাদেশে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি। দেশের জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে তামাক চাষের পরিবর্তে খাদ্যশস্য ফলানোর উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীর খসড়া দ্রুত পাস করার দাবি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে ঢাকা আহছানিয়া মিশন অডিটোরিয়ামে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘তামাক নয়, খাদ্য ফলান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী শরিফুল ইসলাম। এতে বলা হয়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে, বিশ্বে ৭৯টি দেশে ৩ কোটি ৪৯ লাখ মানুষ চরম মাত্রায় খাদ্য অনিরাপত্তায় ভুগছে। এমন অবস্থায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ অগ্রাধিকার হিসাবে বিবেচনায় আনা অতীব জরুরি। তাই, খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে তামাক চাষের পরিবর্তে খাদ্যশস্য ফলানোর উদ্যোগ নিতে হবে। তামাক চাষ মূলত রবি ফসলের মৌসুমেই হয়। সে সময় নানা রকম সবজি, ডাল, তৈলবীজ, ধান এসব ফসল না করে জমিতে ক্ষতিকর একটি ফসল উৎপাদিত হচ্ছে। তা দিয়ে সিগারেট, বিড়ি, জর্দার মতো নিকোটিনযুক্ত পণ্য উৎপাদন করে জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে এসডিএফ’র চেয়ারপার্সন আবদুস সামাদ বলেন, বাংলাদেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ মাত্র ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৭ হাজার একর। অথচ, তামাক চাষে ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। দেশে তামাক চাষ বন্ধ করতে হলে, প্রয়োজন তামাকের ব্যবহার কমানো। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন সংসদ অধিবেশনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীর খসড়া দ্রুত পাস করা জরুরি। পাশাপাশি ই-সিগারেট বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আলোচনা সভায় বক্তারা জানান, তামাক চাষে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক নদীর পানিতে মিশে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে মৎস্য প্রজনন, ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা। তাই, জনস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে সংশোধিত আইনটি পাস এখন সময়ের দাবি।
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সভাপতি কাজী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন—জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অতিরিক্ত হোসেন আলী খোন্দকার, সিটিএফকে-বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রেসিডেন্ট গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হকসহ অনেকে।
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রোগ্রাম অফিসার শারমিন আক্তার রিনি’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।