জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন কপ (কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজ) এর ২৮তম আসরে প্রথম বারের মতো চালু হয়েছে ধর্মীয় প্যাভিলিয়ন। জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলায় বিশ্বাসী সম্প্রদায় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করতেই তা চালু করা হয়েছে। প্যাভিলিয়নটি আয়োজনে সহযোগিতা করেছে কপ-২৮ প্রেসিডেন্সি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহনশীলতা ও সহাবস্থান মন্ত্রণালয়, দি হলি সি, জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি), মুসলিম কাউন্সিল অব এল্ডার্স।
প্যাভিলিয়নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান, সহনশীলতা ও সহাবস্থানমন্ত্রী শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ান ও পোপ ফ্রান্সিসের প্রতিনিধি ভ্যাটিকান স্টেট সেক্রেটারি কার্ডিনাল পিয়েত্রো প্যারোলিন। ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বিজ্ঞানী ও রাজনৈতিক নেতাদের সংযোগ তৈরি করাই এর প্রধান লক্ষ্য।
ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন মিসরের বিশ্বখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ড ইমাম শায়খ ড. আহমদ আল-তাইয়েব এবং পোপ ফ্রান্সিস। তারা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
আল-আজহারের গ্র্যান্ড ইমাম বলেন, ‘মুসলিম কাউন্সিল অব এল্ডার্সের ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ সত্যিই নানা কারণে প্রশংসনীয়। প্রথমত, কপ-২৮ এর আবুধাবি আন্তঃধর্মীয় বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার জন্য এখানে বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দ্বিতীয়ত, কপ-২৮ এ প্রথমবারের মতো ফেইথ প্যাভিলিয়ন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জের সময়ে ধর্মীয় নেতাদের কণ্ঠস্বর শোনানোর জন্য মূল্যবান সুযোগ তৈরি হয়েছে।
এ সময় আল-আজহারের ইমাম গাজায় নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের জীবন রক্ষায় ধর্মীয় নেতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘আজ বিশ্বে এমন জোটের প্রয়োজন, যা কারো বিরুদ্ধে নয়; বরং সবার উপকারে কাজ করবে। আসুন, ধর্মীয় প্রতিনিধি হিসেবে আমরা একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করি, যেন আমরা দেখাতে পারি, পরিবর্তন সম্ভব। যেন সবাইকে সম্মানজনক ও টেকসই জীবনধারা দেখাতে পারি। আসুন, আমরা বিশ্বনেতাদের আমাদের সাধারণ ঘর রক্ষা করার জন্য বলি।
কপ-২৮ এর সভাপতি ড. সুলতান আল জাবের বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের রাজনীতি, সীমানা বা ধর্ম নিয়ে চিন্তা করে না। তাই, জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলায় আমাদের সাফল্য নিশ্চিত হবে, ওই সময় যখন আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারব। কারণ, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক দায়িত্ববোধ ও সচেতনতা প্রচারে ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের গ্রহের সুরক্ষায় ধর্মীয় নেতারা ঐতিহাসিক মুহূর্তে একত্রিত হয়েছেন।