আসন্ন সেচ মৌসুমে সেচ পাম্পগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে ১৭টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিদ্যুৎ ভবনে সেচ পাম্পগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় পর্যালোচনা সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।
সভায় জানানো হয়, আগামী জানুয়ারিতে সেচ মৌসুম শুরু হবে। তা এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।
গত সেচ মৌসুমে এপ্রিল মাসে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৬ হাজার মেগাওয়াট। আসন্ন সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের সামগ্রিক চাহিদা ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বর্তমানে সেচ সংযোগের সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮৫১টি এবং অপেক্ষমাণ আবেদন সংখ্যা ৯ হাজার ৪৩২টি। শুধু সেচের জন্য জানুয়ারিতে ৩৪৭ মেগাওয়াট, ফেব্রুয়ারিতে ৮৬৫ মেগাওয়াট, মার্চে ১ হাজার ৯৪৯ মেগাওয়াট, এপ্রিলে ২ হাজার ৫৯০ মেগাওয়াট, মে মাসে ২ হাজার ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা আছে।
আসন্ন সেচ মৌসুমে গ্যাসের চাহিদা ১ হাজার ৭৬০ এমএমসিএফডি। এ চাহিদা ন্যূনতম ১ হাজার ৫৪০ এমএমসিএফডি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া, ফার্নেস অয়েলের চাহিদা ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ও ডিজেলের চাহিদা ১৫ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
জ্বালানি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ফার্নেস অয়েল ও ডিজেলের কোনো ঘাটতি নেই। চাহিদা মোতাবেক সরবরাহ করা হবে।
সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো—আসন্ন সেচ মৌসুমে জ্বালানি পরিবহনের ক্ষেত্রে যাতে কোনো প্রকার সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএ ও বিপিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বাবিউবো) পক্ষ থেকে যোগাযোগ রক্ষা করে জ্বালানি পরিবহন নিশ্চিত করা হবে। সেচ পাম্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গ্রিড উপকেন্দ্র, সঞ্চালন লাইন, বিতরণ লাইন ও উপকেন্দ্রসমূহ সংরক্ষণ ও মেরামতকাজ জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে হবে। ওভারলোডেড সাবস্টেশনসমূহ ও সঞ্চালন লাইনের আপ-গ্রেডেশনের কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করাসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে ন্যূনতম ২ মাসের উৎপাদন ক্ষমতা রাখার জন্য জ্বালানি তেলের মজুদ নিশ্চিত করা হবে। সেচ পাম্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ তদারকির জন্য মনিটরিং কমিটি গঠন এবং গঠিত মনিটরিং কমিটির কার্যক্রম জোরদার করা হবে।
সভায় জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলম, পিডিবির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ রেলপথ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দপ্তর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।