জাতীয়

আগামী বছর বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে: প্রতিমন্ত্রী

নতুন বছরে দেশে বিদ্যুৎ চাহিদা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ২০২৪ সালে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ৮ থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে যাবে। এজন্য পরিকল্পিত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্রান্সমিশন লাইন ভালো অবস্থানে আসবে। জ্বালানি ভালো অবস্থানে থাকবে।

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংগঠনের সদস্য ও সদস্যের পরিবারের জন্য হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের টিকা প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

ডিআরইউ সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়াও, উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ শিপন প্রমুখ।

তিনি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াত জোট বিরাট সন্ত্রাসের কার্যকলাপ করতে পারে। এজন্য কৃষকের হাতে জ্বালানি পৌঁছানোর ব্যবস্থা সম্মিলিতভাবে করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের কথা হয়েছে। বড় ধরনের অঘটন না ঘটলে সেচ ব্যবস্থায় সমস্যা হবে না।

গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের সমস্যা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ধরে নিচ্ছি মার্চের পর থেকে আমাদের হিট ওয়েদার আসা শুরু হবে। তবে আশা করি, আগামী দুই-তিন মাস ভালো থাকবো। মার্চের পর থেকে আমরা তার প্রস্তুতি নিয়েছি। বিশেষ করে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে সেচ ব্যবস্থার জন্য একটা প্রস্তুতি আমাদের ব্যাপকভাবে আছে।

তিনি বলেন, এ বছর বিদ্যুতের যে চাহিদা ছিল, তার থেকে প্রায় আট থেকে দশ শতাংশ বেড়ে যাবে। আমরা যে ট্রেন্ড দেখতেছি সেটার জন্য পরিকল্পিত একটা ব্যবস্থা নিয়েছি। আশা করছি কোনও সমস্যা হবে না। ভালো অবস্থানেই যাবো। আমাদের ট্রান্সমিশন লাইনও ভালো অবস্থানে আসবে। সাবস্টেশন ভালো অবস্থানে আছে। গ্যাসের অবস্থানও। জ্বালানির ব্যাপারে আমরা একটা ভালো অবস্থানে যাবো, আশা করছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেচে আমাদের প্রায় ১২ লাখ ডিজেল পাম্প আছে। এগুলোতে সময়মতো তেল পৌঁছাতে হবে। এই তেলের জোগান দিতে হবে। আপনারা জানেন কিছুটা সমস্যা ছিল, গত কয়েক মাস জ্বালানির ক্ষেত্রে। বিশেষ করে জেড ফুয়েল থেকে শুরু করে বিশেষ কিছু অসুবিধা ছিল। এটা আমরা এখন সমাধান করে ফেলেছি। আমরা আগাম প্রস্তুতি নিয়েছি।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ যদি না ঘটে সেদিক দিয়ে আমাদের একটা প্রস্তুতি আছে। আমাদের খেয়াল আছে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত জোট জ্বালাও-পোড়াও করে সারাদেশে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। যার ফলে জ্বালানিতে ব্যাপকভাবে সাপ্লাই চেইন ব্যাঘাত হয়েছিল। আমরা সেটারও একটা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। এই নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াত জোট বিরাট সন্ত্রাসের কার্যকলাপ করতে পারে, যেটা আমরা আঁচ করছি। এটার জন্য আমাদের জ্বালানি কৃষকের হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা আমরা সম্মিলিতভাবে করেছি। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার মন্ত্রণালয়ের। আমরা মনে করি আমরা ভালোমতো সরবরাহ করতে পারবো, যদি বড় কোনও অঘটন না ঘটে।

ডলার সংকটে জ্বালানি কাঠামো ভেঙে পড়তে পারে, এমন আলোচনা রয়েছে। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ভেঙে পড়বে না, তবে কিছুটা সংকট তো আছে। কিছুটা সংকট আছে, সেটা আমরা ম্যানেজ করছি। আমরা আশা করছি, আগামী ছয়-সাত মাসের মধ্যে ভালো অবস্থানে চলে যাবে। তবে এখনো সংকট কাটেনি। আমি মনে করি, পরিস্থিতি খুব খারাপের দিকে যায়নি।

সিলেটে আরও তেলের সম্ভাবনা নিয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আরও দুটি খনন করতে যাচ্ছি সিলেটে। আরও পাঁচ-ছয় মাস দেখবো। তেলের পরিমাণ কেমন পাওয়া যাবে, তার পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে উৎপাদন কমে যাওয়ার বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে মনে হয় সম্ভাবনা খুবই ভালো। আমাদের রেজাল্ট যে আসছে বিশেষ করে টুডি, থ্রিডি সার্ভের। ২০২৬-২৭ পরবর্তীকালে আমরা আগের অবস্থানে ফিরে যেতে পারবো। হয়তো ২০২৪, ২০২৫ এবং ২০২৬ এর মধ্যে একটা ডিক্লাইন অবস্থায় থাকবে বিবিয়ানা, কিন্তু ২০২৭-এর আবার সেটা রিকভার করবে। সুতরাং আমি মনে করি এটা একটা বড় আশার বাণী।

এর আগে, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি বলেন, হেপাটাইটিস বি ভাইরাস নিয়ে এখনো অনেকের মধ্যে সচেতনতা নেই। তরুণদের মধ্যেও সচেতনতাটা খুব কম। এটাকে জানান দিতে হবে, এটা একটা বড় জিনিস। হেপাটাইটিস বি টিকা দিতে হবে অনেকে জানেন না। এখন অনেক ধরনের ভাইরাসের ভ্যাকসিন বের হয়ে গেছে। আমি নিজেও ৩০-৪০ বছর আগে জানতাম না এমন একটা ভাইরাস ছিল।