জাতীয়

ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে বাড়ি ফিরছেন যাত্রীরা 

বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে দগ্ধ হয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগুনে পুড়ে আহত হয়েছেন অনেকে। গতকাল রাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার এবং আগামীকাল রোববার (৬-৭ জানুয়ারি) পশ্চিমাঞ্চলের বেনাপোল ও ঢালারচর এক্সপ্রেস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। একই সঙ্গে লোকাল সব ট্রেন বন্ধ রয়েছে। তবে আন্তঃনগর রুটের সব ট্রেন শিডিউল মতোই চলছে বলে জানান কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সরওয়ার।

স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় গত রাতের অগ্নিসন্ত্রাসের কারণে অনিশ্চয়তা থাকলেও আগাম ট্রেনের টিকিট করার কারণে পরিবার নিয়ে অনেক যাত্রীরা এসেছেন কমলাপুরে। অনেকে ট্রেনে কমলাপুর স্টেশন ছেড়েও গেছেন। তারপরও যাত্রীদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্কের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী গাজীউল ইসলাম শীতের ছুটিতে পরিবার নিয়ে গাইবান্ধা যাচ্ছেন। এক সপ্তাহ আগে টিকিট করেছেন। সঙ্গে স্ত্রী, ছেলে আর মেয়ে।

তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে টিভিতে দেখেছি একটা ট্রেনের একাধিক বগি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চারজন মানুষ পুড়ে মারা গেছেন। টিকিট করা ছিল, তাছাড়া ছেলে মেয়ে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। না হলে যাত্রা বাতিল করতাম। ভয়ে ভয়ে যাচ্ছি।'

‘আগে ট্রেনে আসা-যাওয়ার সময় বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি ছিল, এখন নাই। নিরাপত্তা কেনো থাকবে না ভোটের আগে? বাড়ি যেতে পারবো, না পুড়ে হসপিটালে যেতে হবে জানি না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত আরও নিরাপত্তা বাড়ানো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিও কম মনে হচ্ছে। সবার মধ্যে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে’, বলে মনে করেন আরেক যাত্রী ফারজানা আহমেদ। স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড় যাবেন তিনি।

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীতে (আরএনবি) কর্মরত শহীদুল জানিয়েছেন, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী স্টেশনে প্রবেশের সময় যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশি করছে।

তিনি বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তায় আমরা কাজ করছি। প্রত্যেক যাত্রীর ব্যাগ স্কান করার পর প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এতে যাত্রীরা কিছুটা বিরক্ত হলেও সবার নিরাপত্তার জন্যই এটা করা হচ্ছে। তল্লাশির কারণে একটু বেশি সময় লাগছে।

কুলাউড়াগামী যাত্রী মিতা রহমান বলেন, ট্রেন জার্নি নিরাপদ ও আরামদায়ক বলেই টিকিট করেছি। আমার স্বামী ছুটি পাননি, আমি দুই সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছি। কাল রাতের ঘটনার পর ভয় লাগছে। তবে, স্টেশনে যতটা নিরাপত্তা বাহিনী বা ব্যবস্থা থাকা দরকার, ততটা চোখে পড়েনি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্তত এ সময় আরও জোরদার করা উচিৎ। দোয়া করবেন, যেনো নিরাপদে বাড়ি যেতে পারি।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের ৫টি বগিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।