জাতীয়

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাজ্যের অসন্তোষ

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য। বিরোধীদলের নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জনগণের সামনে বিকল্প কিছু ছিল না।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাজ্য দূতাবাস দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সোমবার (৮ জানুয়ারি) যুক্তরাজ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতি দেয়। এতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাজ্য অসন্তোষ প্রকাশ করে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচন নির্ভর করে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার ওপর। মানবাধিকার, আইনের শাসন ও যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান। নির্বাচনের সময় এসব মানদণ্ড ধারাবাহিকভাবে মেনে চলা হয়নি। ভোটের আগে বিরোধীদলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’

পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি: যুক্তরাষ্ট্র

এতে আরও বলা হয়, আমরা ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতা, যা নির্বাচনের পূর্বে ও নির্বাচনের সময় হয়েছে, তার প্রতি নিন্দা জানাই। রাজনৈতিক অঙ্গনে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কোনো স্থান নেই।

‘নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। কাজেই বাংলাদেশের জনগণের হাতে ভোট প্রদানের জন্য সকল বিকল্প উপস্থিত ছিলো না।’

যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ একটি ঐতিহাসিক ও গভীর বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে টেকসই রাজনৈতিক সমঝোতা ও সক্রিয় নাগরিক সমাজ গড়ে তোলার পরিবেশ তৈরি করা অপরিহার্য। আমরা আশা করি সব রাজনৈতিক দল তাদের মতভিন্নতাকে পাশে রেখে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে এক হয়ে কাজ করবে। আমরা এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে সর্বদা প্রস্তুত।

এদিকে, সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুক্তরাজ্য কোনো পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। যারা এসেছেন তাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই বলে সোমবার ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির মুখপাত্র সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছিলেন।

মুখপাত্র আরও বলেন, নির্বাচনে যারা পর্যবেক্ষক হিসেবে এসেছেন তারা স্বাধীনভাবেই এসেছেন। তাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্য সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।

প্রসঙ্গত, গত ৭ জানুয়ারি সারা দেশে একযোগে ২৯৯ আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৯৮ আসনের ফল বেসরকারিভাবে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের দেওয়া তালিকা অনুয়ায়ী নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে ২৯৮ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠা লাভ করেছেন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ১১ এবং ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয়লাভ করেছেন।