সৌদি আরবের পথে রওনা হওয়ার পর ককপিটের কাচে (উইন্ডশিল্ড) ফাটল দেখা দেওয়ায় ২ ঘণ্টা পর ২৯৭ আরোহী নিয়ে শাহজালাল বিমান বন্দরে ফিরেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ। শনিবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি দাম্মাম যাচ্ছিল।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার জানান, ককপিটের কাচে ফাটল দেখা দেওয়ার পর ক্যাপ্টেন সেটিকে ঢাকায় ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেন। ফ্লাইটের যাত্রী ও ক্রু সবাই নিরাপদে আছেন।
বিমানের কর্মকর্তারা জানান, ফ্লাইটে ২৮৫ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু ছিল। ঢাকা থেকে ওড়ার পর ফ্লাইট ক্যাপ্টেন ককপিটের কাচে ফাটল দেখতে পেয়ে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারতের আকাশসীমা থেকে আবার ঢাকার পথ ধরেন।
বিমানের প্রকৌশল ও উপাদান ব্যবস্থাপনা পরিদপ্তরের পরিচালক এয়ার কমোডর মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ওড়ার পর আকাশে উইনশিল্ডে ক্র্যাক দেখা দেয়। চার বছরের মাথায় সাধারণত এমন ঘটনা হওয়ার কথা না। আমরা বোয়িংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, এটা ম্যানুফাকচারিং ফল্ট, না অন্য কোনও কারণে হয়েছে- সেটাও শনাক্তের করার চেষ্টা চলছে।
উইন্ডশিল্ডে ফাটল কি এভিয়েশন খাতের সাধারণ ঘটনা— এমন প্রশ্নে তিনি জানান, খুব যে কমন তা নয়। এর আগেও একটি বোয়িং ৭৮৭ এর উইন্ডশিল্ডে ক্র্যাক হয়েছিল। বোয়িংয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি।
প্রসঙ্গত, ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন ছিলেন তানিয়া রেজা। যিনি চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের স্ত্রী।
এর আগে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিমানের বোয়িং ৭৩৭ এর ককপিটের কাচ ফেটে গেলে সেটিকে মালয়েশিয়ায় গ্রাউন্ডেড করা হয়। একই বছরের অগাস্টে দোহার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আরেকটি বোয়িং ড্রিমলাইনার মাঝ আকাশে একই সমস্যার মুখোমুখি হলে সেটিকে ভারতের আকাশসীমা থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়।
উল্লেখ্য, উইন্ডশিল্ড ভেঙে গেলে উড়োজাহাজের ভেতরে চাপ কমে গিয়ে সেটি ভারসাম্যহীন হয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারে। গত ১৩ জানুয়ারি জাপানের অল নিপ্পন এয়ারওয়েজের (এএনএ) অভ্যন্তরীণ রুটের একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ ওড়ার পর মাঝ আকাশে পাইলট উইন্ডশিল্ডে ফাটল দেখতে পাওয়ায় সেটি আবার হানেদা এয়ারপোর্টে ফেরত আসে। ফ্লাইটটির ৫৯ যাত্রী ও ৬ জন ক্রুর সবাই অক্ষত ও নিরাপদে ফেরেন।
এর আগে, ২০১৯ সালের মে মাসে চীনের সিচুয়ান এয়ারলাইন্সের একটি এয়ারবাস-এ ৩১৯ উড়োজাহাজ ৩২ হাজার ফুট উপরে ওড়ার সময় এর উইন্ডশিল্ড ভেঙে যায়। বাতাসের প্রচণ্ড চাপে কো-পাইলট উড়োজাহাজের বাইরে অর্ধেক বেরিয়ে গিয়েছিলেন। পরে উড়োজাহাজটিকে চেংদু বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করাতে সক্ষম হন পাইলট। তখন ১১৯ যাত্রীর কেউ আহত হননি।