জাতীয়

‘দক্ষিণ এশিয়ায় রাশিয়ার দীর্ঘস্থায়ী ও বিশ্বস্ত বন্ধু বাংলাদেশ’

দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ রাশিয়ার দীর্ঘস্থায়ী ও বিশ্বস্ত বন্ধু বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্দার মান্তিৎস্কি। 

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫২ বছরপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। রাশিয়ান হাউজ, ঢাকা ও বাংলাদেশ-রাশিয়া ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক ইতিহাসে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা, অর্জন ও  গৌরবময় স্মৃতি আছে। রাশিয়ান এবং বাংলাদেশি জনগণের মধ্যে শক্তিশালী ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার শক্ত ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। প্রায় ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধুত্ব, সমতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপরে নির্ভর করে আমাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।  

আলেক্সান্দার মান্তিৎস্কি আরও বলেন, মস্কো ও ঢাকার মধ্যে ফলপ্রসূ সহযোগিতা অনেক ক্ষেত্রেই বিকশিত হচ্ছে। ২০২৩ সালে রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্কে কয়েকটি মাইলফলক দেখা যায়, যেমন: সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের প্রথম বাংলাদেশ সফর, অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ও বাংলাদেশের  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতি এবং নভেম্বর মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে রাশিয়ান প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের শুভেচ্ছা সফর।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। আরও উপস্থিত ছিলেন—বাংলাদেশ রাশিয়া মৈত্রী সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার, বাংলাদেশে বেলারুশের কনসাল জেনারেল অনিরুদ্ধ রায়, রাশিয়ান হাউজের পরিচালক পাভেল দভয়চেনকভ।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫২ বছর পূরণ হচ্ছে। রাশিয়া বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। ১৯৭১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌবহর পাঠালে রাশিয়া তথা তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন পারমাণবিক শক্তিসমৃদ্ধ ডুবোজাহাজ বাংলাদেশের দিকে পাঠায়। ফলে, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী সপ্তম নৌবহর পিছু হটতে বাধ্য হয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে মাইন ফেলে ব্যবহার অনুপযোগী করে রেখে যায়। বাংলাদেশের অকৃত্রিম পরীক্ষিত বন্ধু রাশিয়া সমুদ্র থেকে  মাইন অপসারণ করে চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবহার উপযোগী করতে বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করেছে।

তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া বাংলাদেশের উন্নয়নে সব সময় সহযোগী। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রাশিয়ার সহযোগিতায় গড়ে উঠছে। জাতীয় গ্রিডে খুব শিগগির এ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। 

বক্তারা আরো বলেন, হাজার হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রাশিয়াতে উচ্চ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখছে। বাংলাদেশ রাশিয়াকে সব সময় পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে পাশে পেয়েছে। 

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সম্পর্ক নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।