জাতীয়

উন্নত সেবা দিতে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি নৌ প্রতিমন্ত্রীর আহ্বান

উন্নত সেবা এবং আমদানি-রপ্তানি নির্বিঘ্ন করার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সন্তুষ্টি অর্জনে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীলদের আরো মনোযোগী হতে এবং বারবার ফিল্ড ভিজিটের পরামর্শও দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। 

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরো মনোযোগী হতে হবে। শৃঙ্খলা থাকতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। শৃঙ্খলা না রাখলে কার্যক্রম ভেঙে পড়বে। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালকদের রেগুলার ফিল্ড ভিজিট করতে হবে। শুধু প্রকল্প পরিচালক না, যারা আপনারা আছেন, তারা যখনই যে এলাকায় যাবেন; চার্টে ভিজিটের মন্তব্য লিখে আসবেন। আমি এই মন্তব্যগুলো দেখতে চাই।’ 

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ড জানাতে গিয়ে ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের জমি বরাদ্দের ওপর হাইকোর্টে মামলার বিষয়টি উল্লেখ করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়াররম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, জমি নিষ্টকণ্টক না করে টেন্ডারে যাওয়া কি ঠিক হয়েছে? এখন যে ব্যয় বাড়ছে, এর টাকা কে দেবে? দায় কে নেবে? প্রকল্প ঠিকাদার নেবে? ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

২০০১ সালে আইনের দ্বারা বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ গঠনের বিষয়টি উল্লেখ করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যে লক্ষ্য নিয়ে এটি করা হয়েছে—প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে উষ্ণতা ছড়িয়ে দেওয়া এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে একটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। শতভাগ না হলেও সেটি বেশ এগিয়ে নেওয়ায় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।

এ সময় স্থলবন্দরে স্ক্যানার নষ্ট হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘স্ক্যানার নষ্ট। ম্যানুয়ালে কিন্তু ব্যবসায়ীরা অসন্তুষ্ট। কারণ, তার বিদেশ থেকে আমদানি করে বা রপ্তানি করে। সেটা যদি ওপেন করা হয়, এটা বিরাট হয়রানি। এই হয়রানি যেন না হয়। স্ক্যানারগুলো নষ্ট যেন না হয় বা নষ্ট করে দেওয়া যেন না হয়। কারণ, এটা শুভঙ্করের ফাঁকি।’ প্রয়োজনে কাস্টমসের সঙ্গে সমন্বয় করার পরামর্শ দেন নৌ প্রতিমন্ত্রী।

উন্নত দেশের স্থলবন্দরগুলো কীভাবে সেবা দেয়, সে বিষয়ে অভিজ্ঞতা নিতে প্রয়োজনে বিদেশ সফরের পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেবা হতে হবে উন্নত দেশের মতো।  

৮০০ কোটি টাকা এফডিআর করার সাফল্য অর্জন করায় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা এক সময় মিলিয়ন-বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীন করে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তিনি না থাকলে আজকে আমরা বাংলাদেশ পেতাম না। আজকে আমি, আপনি, আমরা যে অবস্থানে আছি, সেটি স্বাধীন বাংলাদেশের কারণে। আমরা অকৃতজ্ঞ যে, বঙ্গবন্ধুকে ধরে রাখতে পারিনি।  

মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর (সদস্য, ট্রাফিক), যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মুসা (সদস্য, অর্থ ও প্রশাসন), যুগ্ম সচিব ডি এম আতিকুর রহমান (পরিচালক, প্রশাসন), উপ-সচিব আক্তার উননেছা শিউলী (পরিচালক, ট্রাফিক), উপ-সচিব মো. ছাদেকুর রহমান (পরিচালক, হিসাব) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।