জাতীয়

শ্লীলতাহানি: বিএসএমএমইউ-এর অধ্যাপকের বিরুদ্ধে নারী সহকর্মীর মামলা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সবুজের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা হয়েছে।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন মনোরোগ বিভাগের এক সহকারী অধ্যাপক।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ডা. শহীদুল্লাহ সবুজ বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসককে নিজের কক্ষে ডাকতেন এবং অশ্লীল ও আপত্তিকর প্রস্তাব দিতেন। একদিন কক্ষে ডেকে ভুক্তভোগীকে জড়িয়ে ধরে ছবি তুলে রাখেন তিনি। পরে ওই ছবি ব্যবহার করে শহীদুল্লাহ ভুক্তভোগীকে নিয়মিত হুমকি দিতেন।

গত ২৫ জানুয়ারি সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ব্লকের অ্যালামনাই কক্ষে ডা. শহীদুল্লাহর সঙ্গে ভুক্তভোগীর দেখা হলে একা পেয়ে তাকে আবারও জোর করে জড়িয়ে ধরেন। এ সময় ভুক্তভোগী বাঁচার চেষ্টায় ধস্তাধস্তি করলে তাকে মারধরও করেন অভিযুক্ত চিকিৎসক।

ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক জানান, তিন বছর ধরে তিনি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে মনোরোগ বিভাগে কর্মরত আছেন। ডা. শহীদুল্লাহ তাকে বিভিন্ন সময় রুমে ডেকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিতেন। দেখা হলে, তার রুমে যাওয়ার জন্য বলতেন। এর মধ্যে, ডা. শহীদুল্লাহ একদিন তাকে জড়িয়ে ধরে ছবি তুলে রাখেন এবং ব্ল্যাকমেইল করার হুমকি দেন। মানসম্মানের ভয়ে এতদিন তিনি চুপ ছিলেন। কিন্তু ২৫ জানুয়ারির ঘটনার পরে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে মামলার সিদ্ধান্ত নেন।

শাহবাগ থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ডা. শহীদুল্লাহ সবুজের বিরুদ্ধে আনা নারী চিকিৎসকের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বজলুর রহমান বলেন, বিএসএমএমইউর এক নারী চিকিৎসক আরেক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছেন, আমরা সেসবের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।

বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ দুই চিকিৎসকের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা এবং সেটা থানা পর্যন্ত গড়ানোকে ‘অপ্রত্যাশিত ও অনভিপ্রেত’ বলে মন্তব্য করেছেন। অভিযোগ সত্যি হলে সে বিষয়ে প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।

বিএসএমএমইউ প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, দুই চিকিৎসকের মধ্যে ঘটা এই ধরনের ঘটনা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। ওই নারী চিকিৎসক আজ লিখিতভাবে উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দাখিল করবেন।

‘এছাড়া, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নারী নির্যাতন সেলও আছে, সেখানেও তিনি অভিযোগ করবেন বলে জেনেছি। তার অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইন ও ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’- বলেন তিনি।

এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে নাকচ করে অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সবুজ বলেন, আমাদের দুজনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক। তারপরও কেনো এমন অভিযোগ করা হয়েছে, বুঝতে পারছি না। বিষয়টা যেহেতু আইনি পর্যায়ে রয়েছে, তাই আইনিভাবে সব মোকাবিলা করব।