থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর বিষয়ে জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন হবে। প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন হবে।
থাইল্যান্ড শেষে সোমবার (২৯ এপ্রিল) দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ২৪ এপ্রিল বিকেলে সে দেশে যান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করার ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।
থাই প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজ সভায় শেখ হাসিনা বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অনুপ্রেরণা যোগাবে।
তিনি আরো বলেন, ‘সরকারি এই সফর আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে থাকবে। এটি আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা করেছে। আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আগামীতেও সম্পর্কের নবায়নের এই গতিকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
সফর চলাকালীন ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। উভয় নেতার উপস্থিতিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি সই হয়। সেগুলো হলো—একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং একটি অভিপ্রায়পত্র।
নথিগুলোর মধ্যে সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি, জ্বালানি সহযোগিতা, শুল্ক বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তা, পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা স্মারক এবং ২০২৪ সালের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা সংক্রান্ত অভিপ্রায়পত্রও রয়েছে।
শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসে থাই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজেও যোগ দেন। গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে থাই কুহ ফাহ ভবনের সামনের উন্মুক্ত স্থানে লাল গালিচা অভ্যর্থনা জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ এপ্রিল জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেন। এই অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি সকল বিশ্বনেতাকে যুদ্ধ, আক্রমণ এবং আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা।
আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আঞ্চলিক বিরোধ ও উত্তেজনা নিরসনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, সংলাপ শান্তি আনতে পারে।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এসক্যাপের নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়াহ আলিসজাবানা সম্মেলনস্থলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুসিত প্রাসাদের অ্যামফোর্ন সাথার্ন থ্রোন হলে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন এবং রানী সুথিদা বজ্রসুধা-বিমলা-লক্ষণের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।