জাতীয়

শ্রমজীবীদের রেশন, আবাসন, চিকিৎসায় বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি

অবকাঠামো উন্নয়নের মেগা প্রকল্পের পাশাপাশি শ্রমজীবীদের রেশন, আবাসন, চিকিৎসাসহ সামাজিক সুরক্ষায় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট।

শুক্রবার (২৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে এসব দাবি জানায় সংগঠনটি।

ঢাকা নগর কমিটির সভাপতি রতন মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপনের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু নাঈম খান বিপ্লব, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ প্রমুখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার আগামী ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপন করতে যাচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে উন্নয়ন বাজেটের সর্বোচ্চ অংশ বরাদ্দ করা হয়েছে সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে। আর বাজেটের প্রধান অংশ যথারীতি বেতন-ভাতা পরিশোধে ব্যয় হবে। বছর বছর বাজেটের অবয়ব বাড়ছে, বাড়তি বাজেটের অর্থের যোগান দিতে বাড়ছে কর, বাড়ছে ব্যাংক ঋণ, ঘটছে মুদ্রাস্ফীতি, বাড়ছে আয় বৈষম্য। নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের চাপে পিষ্ট হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষ। কিন্তু রাষ্ট্রের এই উন্নয়ন তাদের আয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে না, দিচ্ছে না কাজের নিশ্চয়তা। ফলে, মুখে দারিদ্র্য দূরীকরণ, মুক্তিযুদ্ধের সাম্যের চেতনার কথা যতই বলা হোক; বাজেটের অগ্রাধিকার তালিকা প্রমাণ করছে যে শ্রমজীবীদের যন্ত্রণাকাতর অর্তনাদ বাজেট প্রণয়নকারীদের কানে প্রবেশ করছে না।

তারা আরও বলেন, রাষ্ট্রের সম্পদ উৎপাদনের জোয়াল যারা বহন করছেন সেই শ্রমজীবী মানুষের পুষ্টির নিশ্চয়তা, সুস্থ থাকার নিশ্চয়তা, মাথার ওপর ছাদ থাকার নিশ্চয়তা প্রদানের দায়িত্ব রাষ্ট্র নিলে তা প্রকারান্তরে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে বহুগুণে ফিরিয়ে দেবে। যা কর ফাঁকি দেওয়া, ব্যাংক ঋণ আত্মসাৎকারী কালো টাকার মালিকদের পিছনে বিনিয়োগ করে পাওয়া যাবে না। তাছাড়া, জাতীয় আয়ে দেশের শ্রমজীবী এবং প্রবাসীদের অবদান বাজেটে তাদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়ার গুরুত্বের দাবিদার। বরিশালে ফরচুন সুজ কোম্পানির মালিক শ্রম আইন লঙ্ঘন করে শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রেখে কোটি কোটি টাকা ক্রিকেট দলের ফ্র্যাঞ্চাইজি স্বত্ব কিনতে ব্যয় করছে। নির্ধারিত সময়ে মজুরি পরিশোধ না করে মাসের পর মাস শ্রম আইন লঙ্ঘন করে শ্রমিকদের শোষণ করছে।

সময় দিয়েও শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ না করে শ্রমিকদের ক্ষুদ্ধ করে আনসার দিয়ে হামলা করানোর উস্কানি দেওয়ায় ফরচুন সুজের মালিককে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের রপ্তানিমুখী শিল্প বিকাশের কেন্দ্র শ্রমিকরা, ব্যাংক লুটেরা কারখানা মালিকরা নয়। অথচ সরকারের বিভিন্ন বাহিনী শ্রমিকদের রক্ষার পরিবর্তে শিল্প মালিকদের ভাড়াটে বাহিনীর মতো নিন্দনীয় ভূমিকা পালন করছে। তারা শ্রমিকের বকেয়া বেতন ভাতা আদায় করে দেওয়ার জন্য কোনো ভূমিকা পালন না করলেও মালিকদের অন্যায় আচরণকে প্রতিষ্ঠায় শ্রমিকের ওপর নিপীড়কের ভূমিকা পালন করে।

এসময় নেতৃবৃন্দ শ্রমিকের ওপর গুলিবর্ষণকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি শ্রম আইন বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবিও জানান।