জাতীয়

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স: দুদক সচিব

দুর্নীতি দমন কমিশন সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেছেন, জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য যে কোনও দুর্নীতি রুখতে হবে। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। জনসচেতনতাই রুখবে দুর্নীতি।

রোববার (২ জুন) কুড়িগ্রামে শেখ রাসেল পৌর অডিটোরিয়ামে ‘রুখবো দুর্নীতি গড়বো দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ’ এই স্লোগানে আয়োজিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ‌তি‌নি একথা বলেন।

দুদক সচিব তার বক্তব্যে আরও বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনা বাংলা গড়তে সরকারি পরিষেবা যে কোনও মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতি এক দিনে শেষ হওয়ার নয়। এটি দমনে ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে। শিশুদের মাঝে দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব তৈরি করতে হবে।

গণশুনানিতে শোনা সব অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। অনেকগুলো বিষয়কে অনুসন্ধানের জন্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এসব গণশুনানির জন্য সমাজের বঞ্চিত মানুষেরা সুফল পাচ্ছে। এ ছাড়া, সরকারি কর্মচারীদের মাঝে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য তিনি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় গণশুনানিতে আরও বক্তব্য রাখেন- দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. তালেবুর রহমান, কুড়িগ্রাম দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক, কুড়িগ্রাম জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. আফতাব উদ্দিন, কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার, আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম।

বক্তারা বলেন- কমিশনের সিদ্ধান্ত মতে গণশুনানির আয়োজন করা হয়। সরকারি পরিষেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করাই গণশুনানির মূল অভিপ্রায়।

গণশুনানিতে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা নিতে গিয়ে ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানির শিকার, সেবাপ্রত্যাশী জনসাধারণ দৃঢতার সাথে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।

তাদের অভিযোগসমূহ দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তাগণ শুনেছেন। কিছু অভিযোগের সমস্যা সমাধান করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন এবং অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে পরবর্তীতে কমিশন কর্তৃক যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে দুদক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন।

গণশুনানিতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল, সিভিল সার্জন পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বিএডিসি অফিস, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, বি.আর.টি.এ, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সমাজসেবা, রেলওয়ে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, জেলা কারাগার, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, নির্বাচন অফিস, শিক্ষা অফিস, জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ, প্রাণী সম্পদ অফিসসহ ৪১টি সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে ৭৮টি অভিযোগ পাওয়া যায়; তন্মধ্যে ৭২টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ শুনানির জন্য সেবাপ্রার্থী জনসাধারণ সরাসরি উপস্থাপন করেছেন। উপস্থাপিত ৭২টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি অভিযোগ প্রাথমিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।