জাতীয়

জাতীয় সংসদের শোক প্রস্তাবে আনোয়ারুল আজীম আনারের নাম নেই

সংসদ অধিবেশনের রীতি অনুযায়ী অধিবেশনের শুরুতেই সংসদ সদস্য ও বিশিষ্টজনদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হলেও তাতে নাম নেই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের।

বুধবার (৫ জুন) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের জন্য কোনও শোক প্রস্তাব আনা হয়নি।

সম্প্রতি কলকাতায় গিয়ে তার খুনের তথ্য জানাজানি হলেও হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত না হওয়ায় শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেনি সংসদ। এমনকি তার সংসদীয় আসনও শূন্য ঘোষণা করা হয়নি।

আনার ভারতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে গত ২২ মে গণমাধ্যমকে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তবে তার লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল ভারতের সরকার বা বাংলাদেশ থেকেও ওই সংসদ সদস্যের মৃত্যুর বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। এ অবস্থায় তার সংসদীয় আসনটি শূন্য ঘোষণার বিষয়ে অপেক্ষা করছে সংসদ সচিবালয়। তার মৃত্যুর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হলে সংসদ থেকে ওই আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হবে।

এ বিষয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি ব্যতিক্রম। অতীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। এ জন্য তারা আরও অপেক্ষা করবেন। ৫ জুন সংসদ অধিবেশনের আগেই একটি সুরাহা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু লাশ এখনও না মেলায় বিষয়টির কোনও সমাধা হয়নি।

উল্লেখ্য, মৃত্যু, পদত্যাগ বা অন্য কোনও কারণে সংসদের কোনও আসন খালি হলে সংসদ সচিবালয় থেকে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ওই আসনটি শূন্য (মৃত্যুর তারিখ থেকে) ঘোষণা করা হয়। পরে গেজেটের কপি পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে। নির্বাচন কমিশন ওই শূন্য আসনে ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচনের আয়োজন করে।

ইরানের রাষ্ট্রপতি ড. সৈয়দ ইব্রাহিম রাইসিসহ দেশের তিন জন সাবেক সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদে এ শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

এ ছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য একাদশ জাতীয় সংসদে নেত্রকোনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মানু মজুমদার, একাদশ জাতীয় সংসদে ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মনজুর হোসেন ও তৃতীয় জাতীয় সংসদের বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবির হিরুর মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা হায়দার আকবর খান রনো, আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-কমিটির সাবেক সদস্য শফি আহম্মেদ, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু আহমেদ নাসিম, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক হামিদুল হক চৌধুরী এবং বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

শোক প্রস্তাবে মৃত্যুবরণকারী সবার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। মৃত্যুবরণকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী এমপি।

সম্প্রতি সারা দেশে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালে হতাহত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিবর্গ এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্মরণে শোক প্রকাশ করা হয়।