জাতীয়

প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ

সোমবার (১৭ জুন) ঈদুল আজহা। জাতীয় ঈদগাহ ঈদের জামাতের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এবার ৩৫ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করবেন।

জাতীয় ঈদগাহের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ঈদগাহজুড়ে প্যান্ডেল টানানো হয়েছে। এখন সিলিং ফ্যান, লাইট ও মাইক লাগানো এবং মাঠের পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ। সব কাজই চলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে। মূল প্রবেশপথ থাকবে চারটি। জামাত শেষে বের হওয়ার জন্য উত্তরের দিকে আরও তিনটি গেট খোলা থাকবে। এছাড়া নারীদের জন্য আলাদা প্রবেশপথ করা হয়েছে।

ঈদের দিন সকালে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নামাজ পড়বেন। সেজন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঢেলে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ছাড়াও স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) এবং ভিভিআইপির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন। বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে জানা গেছে, জাতীয় ঈদগাহে ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। এছাড়া মুসল্লিরা মূল প্যান্ডেলের বাইরে নামাজ পড়তে পারবেন। ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশের জন্য ভিআইপি গেট থাকছে একটি। পাশাপাশি জনসাধারণের জন্য একটি এবং নারীদের জন্য পৃথক একটি গেট রাখা হয়েছে। এছাড়া, ঈদ জামাতে ভিআইপি পুরুষ কাতার থাকবে পাঁচটি এবং নারীদের জন্য কাতার থাকবে একটি। জনসাধারণের জন্য পুরুষ কাতার থাকবে ৬৫টি বড় আকারের। ৫০টি ছোট আকারের মহিলা কাতার থাকবে। অজুখানায় একসঙ্গে প্রায় ১১৩ জন পুরুষ ও ২৭ জন মহিলা পৃথক স্থানে অজু করতে পারবেন। জাতীয় ঈদগাহে ১০টি এয়ার কুলার ছাড়াও পর্যাপ্ত ফ্যান ও লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাবার পানি ছাড়াও থাকছে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র, ভ্রাম্যমাণ টয়লেটসহ বৃষ্টির পানি নিরসনের ব্যবস্থা।

কোনো কারণে কেউ অসুস্থ হলে তার জন্য থাকবে মেডিক্যাল টিম। মুসল্লিদের জন্য থাকবে পর্যাপ্তসংখ্যক টয়লেট। গণপূর্ত, বিদ্যুৎ, ওয়াসা, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্নিষ্ট সেবা সংস্থার লোকজন সর্বক্ষণ তৎপর থাকবেন। অগ্নিকাণ্ডের মতো কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিস সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকবে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকবে। লোডশেডিং হলে বিকল্প হিসেবে থাকবে জেনারেটর।

এবার জাতীয় ঈদগাহে প্রায় ২৫০ জন অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ (ভিভিআইপি) প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ নামাজে অংশ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া, ঈদগাহের বাইরেও এই জামাতে অংশ নিতে পারবেন। সুশৃঙ্খলভাবে ঈদ জামাত আয়োজনের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।  সব প্রবেশ পথ এবং ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের নামাজের স্থানসহ ঈদগাহ মাঠে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। মুসল্লিদের প্রবেশের আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির পর আর্চওয়ে দিয়ে প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে হবে। ঈদের প্রধান জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাদা পোশাকে র‌্যাব এবং পুলিশ সদস্যরা ঈদগাহ ময়দানে সার্বক্ষণিক তৎপর থাকবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের বলেন, নারীদের বের হওয়ার জন্য আলাদা গেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি হলে যেন ভেতরে পানি ঢুকতে না পারে, সেজন্য ত্রিপল দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গত বছরও বৃষ্টির মধ্যে আমাদের এখানে জামাত হয়েছে। কিন্তু ঢাকাবাসীকে আমার স্বাচ্ছন্দ্য দিতে পেরেছি, কোনো রকমের অসুবিধা হয়নি। গত বছরের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে আমরা আশা করছি যে, এবারো এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে করে মুসল্লিদের কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে না হয়। কোনো জলাবদ্ধতা ও পানির বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না, ভালোভাবে যেন তারা বাসায় ফিরতে পারেন।