জাতীয়

কুয়েত ও আবুধাবির অর্থায়নে নির্মিত হবে ‘চুনকুড়ি সেতু’

কুয়েত ও আবুধাবির ঋণে নির্মিত হবে খুলনা চুনকুড়ি নদীর উপর ‘চুনকুড়ি সেতু’। এতে ব্যয় হবে ৮৬.৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৪২.২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (কেএফএইডি) এবং ৩০ মিলিয়ন দেবে আবুধাবি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট। এ বিষয়ে একটি ঋণ চুক্তি হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

গত ২৪ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল ওপেক ফান্ড প্রাইভেট সেক্টর অপারেশনের ২৫তম বার্ষিকীতে যোগ দিতে অস্ট্রিয়ার রাজধানি ভিয়েনা সফর করেন। প্রতিনিধিদলে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, অস্ট্রিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মিরানা মাহরুখ রয়েছেন।  

এ সময় অর্থমন্ত্রী কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ওয়ালিদ আল বাহারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের ১৯৭৪ সাল থেকে অব্যাহত সমর্থন ও সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আগামীতে আরও সহায়তা বৃদ্ধির জন্যও অর্থমন্ত্রী অনুরোধ করেন।

ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ওয়ালিদ আল বাহার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেন এবং আশ্বস্থ করেন, বাংলাদেশের উন্নয়নকে সহায়তা করতে তহবিল আরও বাড়ানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হবে। সরকারি খাতের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের জন্যও সহায়তা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

সূত্র জানায়, সভার পর বাংলাদেশ সরকার এবং কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের মধ্যে খুলনা জেলায় চুনকুঁড়ি নদীর উপর ‘চুনকুঁড়ি সেতু প্রকল্প’র জন্য একটি ঋণ চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে ৮৬.৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৪২.২০ মিলিয়ন ডলার দেবে কেএফএইডি এবং ৩০ মিলিয়ন দেবে আবুধাবি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট। প্রকল্পটির লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন বৃদ্ধি করা এবং রাজধানী ঢাকার সঙ্গে এই অঞ্চলের সরাসরি সড়ক যোগাযোগের মাধ্যমে যাত্রী ও মালবাহী যানবাহন চলাচল সহজ করা।

সূত্র আরও জানায়, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সাইডলাইন মিটিংয়ে ওপেক ফান্ডের প্রেসিডেন্ট ড. আবদুল হামিদ আল খালিফার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। তাদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ৩২টি প্রকল্পের অনুকূলে ৬৯৩.৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের মাধ্যমে অবদানের জন্য ওপেক তহবিলকে ধন্যবাদ জানান।

বাজেট সহায়তা দিয়ে কোভিড ক্রান্তিকালিন সময়ে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য তিনি তহবিলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে সহায়তা দেওয়ার জন্য তহবিলের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশ যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে আরও বেশি সহোযোগিতা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য ওপেক ফান্ডকে অনুরোধ তিনি করেন।

ওপেক ফান্ডের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের বিশ্বস্থ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে ওপেক তহবিল অবশ্যই বাংলাদেশের উন্নয়ন সহায়তা বৃদ্ধি করবে। তিনি অর্থমন্ত্রীর দেওয়া একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির ধারণা গ্রহণ করেন এবং উল্লেখ করেন, ওপেক বৃহত্তর সহযোগিতার জন্য তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষর করবে।