নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কোটা আন্দোলনের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত ঢুকে অরাজকতা তৈরি করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচক্ষণতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। ভয়াবহ অবস্থা থেকে দেশকে রক্ষা করেছেন।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ নৌপরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ১২ দফা দাবি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বৈঠকে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে যখন সরকার ও কোটা আন্দোলনকারী ছাত্রদের সমঝোতা চলছে, স্বস্তির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, ঠিক সে সময় আন্দোলনকে ডাইভার্ট করা হলো। দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা হয়েছে। ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। ছাত্র, অভিভাবক, পথচারী কেউ বাদ যায়নি। বিভৎস ঘটনা। মেরে উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচক্ষণতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। ভয়াবহ অবস্থা থেকে দেশকে রক্ষা করেছেন। তিনি ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হলেন। বুদ্ধি ও বিচক্ষণতা দিয়ে সবকিছু মোকাবিলা করলেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত সকল পরিস্থিতি ধৈর্য ও সাহসিকতার সাথে মোকাবিলা করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শুধু নৌ সেক্টর নয়, সকল ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে। ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথে নাব্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। নৌ সেক্টরের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সরকার কাজ করছে। আমাদের সক্ষমতা ও সম্পদ বাড়ছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করা হচ্ছে। নতুন ‘পায়রা বন্দর’ নির্মাণ করা হয়েছে। মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ হচ্ছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থায় ‘সি’ ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়ে সম্মানিত হয়েছে। নতুন নতুন পর্যটকবাহী ক্রুজ জাহাজ আসছে। বিআইডব্লিউটিএ’র বিভিন্ন সেবার পেমেন্ট অনলাইনে নেওয়া হচ্ছে, আরো নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
ফ্রান্সে অলিম্পিক গেমসের মার্চপাস্ট নদীতে জাহাজে করার প্রসঙ্গে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের সরকারের ধারাবহিকতা থাকলে বাংলাদেশেও বুড়িগঙ্গায় এ ধরনের জাহাজ চলবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। দরিদ্রতাকে জয় করেছি। সক্ষমতা ও মর্যাদার জায়গায় পৌঁছেছি। পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল আমাদেরকে মর্যাদার জায়গায় নিয়ে গেছে। সেটি অনেকের পছন্দ না। সেজন্য তারা তিন দিন দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা কন্টেন্ট তৈরি করে বিতর্কিত করা হচ্ছে। কারণ, তাদের ধারণা, প্রধানমন্ত্রীকে নামিয়ে দিতে পারলে বাংলাদেশকে নামিয়ে দেওয়া যাবে। দেশে একটি ভিন্ন অবস্থা বিরাজ করছে। ছাত্ররা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে আন্দোলন করে। দেশের স্বাধীনতা অর্জনে ছাত্ররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ছাত্রদের প্রতি স্নেহ ও ভালবাসা আছে। ছাত্ররা নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করেছে। সরকারের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এর সুন্দর সমাপ্ত করেছে। ২০১৮ সালে কোটা আন্দোলন সমাধান হয়েছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, আপনাদের দাবির বিষয়ে বিভিন্ন মহলে কথা বলব। প্রতিটি জিনিস শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসব। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরও নিয়মের মধ্যে আসতে হবে। সে মানসিকতা তৈরি করতে হবে। আমাদের সক্ষমতা হয়েছে, এখন মানবকাঠামো তৈরি করতে হবে। তাহলে, দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম সোহায়েল, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এম মাকসুদ আলম, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বাংলাদেশ নৌপরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এ বি এম সফিউল আলম বুলু, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বেপারী ও সহ-সভাপতি মাহবুব হোসেন।